দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: শুক্রবার জাতীয় বীমা দিবস। ২০২০ সাল থেকে এই দিবসটি পালন করা হচ্ছে। ফলে ১ মার্চ জাতীয় বিমা দিবসে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা। এর মাধ্যমে আগামী সপ্তাহ থেকেই দেশের ব্যাংকে বিমাপণ্য বেচাকেনার সেবা প্রাথমিকভাবে কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখায় মিলবে। পর্যায়ক্রমে এই সেবা আরও বিস্তৃত হবে। মুলত কিন্তু মহামারির কারণে গত দুবছর সীমিত পরিসরে দিবসটি পালন করা হয়। এবার বড় আয়োজনে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। কেন এই ১ মার্চ এই জাতীয় বীমা দিবস? এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হচ্ছে, অনেক আগে অর্থাৎ ১৯৬০ সালে ১ মার্চ তৎকালীন আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে এ অঞ্চলের প্রধান হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রাজনীতি নিষিদ্ধের ওই সময়ে বঙ্গবন্ধু বীমা খাতে যোগ দিয়েছিলেন। বীমা কোম্পানির কর্মী হিসেবে তিনি সারা দেশে ভ্রমণ করেছিলেন। বীমার কাজের আড়ালে রাজনীতি করার সুযোগ নিয়েছিলেন। এ জন্য সরকার ১ মার্চকে বীমা দিবস উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়। দিবসটির আয়োজনে রয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

আজ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বীমা দিবসটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এবার জাতীয় বিমা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘করব বিমা গড়ব দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’। ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা চালুর জন্য ইতিমধ্যে একটি নীতিমালা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো করপোরেট এজেন্ট হিসেবে বিভিন্ন বিমাপণ্য ও সেবা বিক্রি করতে পারবে।

বীমা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথকভাবে বাণী দিয়েছেন। এবারের বীমা দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘করব বিমা গড়ব দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’। এই বীমা জগতে দেশে ১ কোটি ৭১ লাখ মানুষ বীমার সঙ্গে সংপৃক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বীমার গুরুত্ব অনুধাবন করে পুরোনো আইনকে ঢেলে সাজিয়ে নতুন বীমা আইন প্রণয়নের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইন করে। বীমা খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ২০১১ সালে অধিদপ্তর বিলুপ্ত করে প্রতিষ্ঠা করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান জানান, বীমা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে জারি হয়েছে করপোরেট গর্ভন্যান্স গাইডলাইন-২০২৩ ও রেগুলেটরি স্যান্ডবক্স গাইডলাইলন। ব্যাংকের মাধ্যমে বীমা পণ্য বিপণনের জন্য প্রবর্তন করা হয়েছে ব্যাংকাস্যুরেন্স। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের স্মারক হিসেবে খোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা। পাইলট পর্যায়ে জীবন বীমা করপোরেশনের মাধ্যমে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে ৫০ হাজার শিক্ষার্থীকে এর আওতায় আনা হয়।

সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি কোম্পানিগুলোও এখন বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা পলিসি চালু করেছে। তিনি আরও বলেন, সামাজিক বীমা ব্যবস্থার আওতায় চালু হয়েছে শস্য বীমা, প্রবাসী বীমা, স্বাস্থ্য বীমা, হজ বীমা, ক্ষুদ্র বীমা ও গবাদি পশু বীমা। দুর্ঘটনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও বীমার ব্যবস্থা রয়েছে।