শফিকুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) মূল্যসূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় লেনদেন হয়েছে। একই সঙ্গে কমেছে বাজার মূলধন ও লেনদেনের পরিমাণ। তবে গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিললেও সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার প্রায় দ্বিগুণের।

ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) মোট বাজার মূলধন হারিয়েছে ১২ হাজার ৫১৪ কোটি টাকার বেশি। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর সূচকের সাথে লেনদেন কমেছে ৮০৮ কোটি টাকা। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর দরপতনে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর। এর মাধ্যমে টানা ছয় সপ্তাহ পতনের মধ্যে থাকলো পুঁজিবাজার। ছয় সপ্তাহের এই পতনে ডিএসইর বাজার মূলধন হারিয়েছে ৭৭ হাজার কোটি টাকার ওপরে। অপর পুঁজিবাজার সিএসইতে সূচক পতনে কমেছে লেনদেন। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, গত সোমবার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৬৩৫ কোটি ৪৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকায়। আর বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৬ লাখ ৯২ হাজার ৫৪০ কোটি ৪ লাখ ৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে বাজার মূলধন ৭ হাজার ৯৫ কোটি ৪২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা বা ১.০১ শতাংশ কমেছে।

সূচকের এ নিম্নমুখী প্রবণতার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৮৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭৯৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। লেনদেন কমেছে ৮০৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

এদিকে, চলতি সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৫৫৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১১.১৮ শতাংশ বা ৬২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬.৩৮ পয়েন্ট বা ০.৪৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৪১.৬৬ পয়েন্টে।

অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬.৭৭ পয়েন্ট বা ০.৫২ শতাংশ কমে ১ হাজার ২৯৩.০৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬.১৪ পয়েন্ট বা ০.৩০ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৫৭.৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আলোচ্য সময়ে ডিএসইর এসএমই মার্কেটে ডিএসএমইএক্স সূচক ১০.৫৪ পয়েন্ট বা ০.৬৯ শতাংশ কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৫৩৬.৫৪ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৯৫টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩৩টি কোম্পানির, কমেছে ২২৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

এদিকে, সপ্তাহ ব্যবধানে দেশের অপর পুঁজিবাজার সিএসইর প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ০.৯১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১৬৮.১১ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ০.৮৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৯৩৭.১৯ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ১.২৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৪.৬৯ পয়েন্টে, সিএসই৩০ সূচক ০.৩৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৬৮.৯৮ পয়েন্টে এবং সিএসই-৫০ সূচক ০.৮৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৪.৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ।

বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে ৬৬ কোটি ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৫৮ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৭৪ কোটি ৯০ লাখ ৪৬ হাজার ৯৩৯ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতেলেনদেন কমেছে ৮ কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা বা ১১.৮৬ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩১২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৪টির, কমেছে ১৮৬টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টি কোম্পানির শেয়ার দর।

গত সোমবার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে সিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২৫ হাজার ৭৫০ কোটি ৩ লাখ টাকায়। যা সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২০ হাজার ৩৩১ কোটি ২৭ লাখ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন ৫ হাজার ৪১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা কমেছে।