দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার মোঃ ফয়সাল আহমেদের বাবা মোঃ আব্দুল হামিদ সরকার ,গ্রাম-পূর্ব তেলিজানা ,ডাকঘর: রায়গঞ্জ, উপজেলা: রায়গঞ্জ ,জেলা: সিরাজগঞ্জ ,মুক্তিযুদ্ধো পোষ্য কোটায় চাকরি পেলও তার পিতা মোঃ আব্দুল হামিদ সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধা না । জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সূত্রে এ বিষয়টি নিশ্চিত করছে দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে।

২০০১ থেকে ২০০৬ সালে জোট সরকারের আমলে  ২ লক্ষ ১০ হাজার ৫৮১ জনকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং এ থেকে ১ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮৮৯ জনের তালিকার গেজেট প্রণয়ন করা হয় ।চারদলীয় জোট আমলে ৭০ হাজার বেশি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।এরপর প্রশাসক জেলা  ও ইউএনওদের নিয়ে  কমিটি করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় ।

জামুকা সূত্রে  জানা গেছে ,গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি জামুকার সুপারিশ বিহীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেসরকারি গেজেট নিয়মিত করনের লক্ষে  সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই -বাছাই কমিটির প্রতিবেদন পাঠায় ।মোঃ আব্দুল হামিদ সরকার ,পিতা আজগর আলী সরকার ,গ্রাম- পূর্ব তেলিজানা  ,ডাকঘর -রায়গঞ্জ ,উপজেলার -রায়গঞ্জ ,জেলা -সিরাজগঞ্জের এর যাচাই-বাছাই প্রতিবেদন জামুকাতে পাঠানো হয় ।

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাজিবুল আলম স্বাক্ষরিত (স্বারক নাম্বার নং ০৫.০৪৩৮৮৬১.০০০.৩৩.০০৪.২০০ -৮৬ )ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় ,’তার সাক্ষীগন অনুপস্থিত ছিলেন শুনানিতে ।উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশ্নের তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নাই ।

সবদিক বিবেচনা তার আবেদন সর্বসম্মতিক্রমে না মঞ্জুর করা হয় ।মোঃ আব্দুল হামিদ সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে বেসরকারি গেজেটেড বাতিল করা হয় ।তার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা মন্ত্রনালয় আগেই বন্ধ রেখেছে। এ বিষয়টি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মোঃ শাহ আলম জানায় যাচাই-বাছাইয়ের শেষে মোঃ আব্দুল হামিদ সরকারের আবেদন সর্বসম্মতিক্রমে না মঞ্জুর করা হয় ।

উল্লেখ্য তিনি লিখিত পরীক্ষায় ২৪ পেলেও মৌখিক পরীক্ষায় পেয়েছেন ২৫ ।লিখিত পরীক্ষার পাশ নাম্বার ছিল ২৫ ।সে হিসেবে তিনি পরীক্ষায় ফেল করেছেন । তার শ্বশুর জামাতের নেতা এবং সিরাজাগঞ্জ একটি মাদরাসার অধ্যক্ষ ছিলেন।শ্বশুর মোটা অংকের টাকা খরচ করে তৎকালীন প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ফেল করার পরেও সেকশন অফিসার ভাগিয়ে নেয়।

সম্প্রতি শোনা যায় মোটা অংকের টাকা খরচ করে বাপের নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তভূক্ত করে রাতারাতি সাবেক শিবির নেতা থেকে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি ঘোষণা দিয়ে কমিটি প্রকাশ করে। ইআবিতে যোগাযোগ করে জানা যায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কর্মী ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে যারা ধারণ করে তাদের সাথে আলোচনা /পরামর্শ না করে বিশ্ববিদ্যালয় বাইরের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় চিহ্নিত বিএনপি, জামাত ও শিবিরকে নিয়ে এই ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় যোগদানের পর থেকে তার সাথে বিএনপি, জামাত ও শিবিরের সাথে তার সখ্যতা রয়েছে এবং তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মকান্ডের কারণেঅকারণে সে বিতর্কিত। স্বার্থের জন্য সে সব করতে পারে। স্বার্থ যেখানে নাই সেখানে তাকে পাওয়া যায় না। তিনি অর্থ ও হিসেব দপ্তরে নিজ কক্ষে বসে সদস্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে সরকার বিরোধী সকল ধরনের কার্যক্রম দীর্ঘদিন যাবত পরিচালনা করে আসছেন  । তার রুমে বসে জামাত ও বিএনপি মতাদর্শদের সংগঠিত করে  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপে রাখতে চায়।

টাকার উৎস নিয়ে কিছু সদস্য প্রশ্ন করলে তখন মোঃ ফয়সাল আহমেদ বলেন আপনাদের টাকার উৎস জানার দরকার নেই আপনাদের কত লক্ষ/কোটি টাকা লাগবে বলেন আমি ব্যবস্থা করে দিব। পরবতীতে এই অর্থায়নের উৎস বেরিয়ে আসে । ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার শিবির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় শিবির নেতা সাবেক রেজিষ্টার রেজাউল হক ও বিশ্ববিদ্যালয় বাইরের কিছু  বিতর্কিত ব্যক্তি তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য মোটা অংকের অর্থ  ফয়সাল আহমেদকে প্রদান করেন ।

শিবির নেতা সাবেক এই রেজিস্টার জোট সরকারের আমলে চাকুরি পেলেও পরবতীতে শিবিরের নেতা হিসেবে পরিচিত পান এবং তাকে সরকারবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার সাথে যুক্ত থাকার ফলে নির্বাচন কমিশন থেকে চাকুরিচ্যুত করা হয়। শিবিরের নেতা সাবেক রেজিস্টার রেজাউল হকসহ বিএনপি ও জামাত নেতাদের কাছ থেকে এসব অর্থ সংগ্রহ করা হয়। রেজাউল হককে পাবনা থেকে ফয়সাল নিয়ে আসে  ইআবিতে। রেজাউলের সাথে সিন্ডিকেট করে সে বিভিন্ন ফাইল থেকে বাণিজ্য করে।

রেজাউল হক লিয়েনে এক বছরের জন্য আসেলেও মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অর্জিত ছুটি দিয়ে ফয়সাল জোর করে তিন মাস রাখে। তিন মাস শেষ হওয়ার পর ফয়সাল অবৈধভাবে তাকে রাখার জন্য তদবির করে । সাবেক শিবির নেতা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার পদে আসার জন্য আবার ও তদবির করে । মোটা অংকের অর্থ খরচ করে বিভিন্ন জনের কাছে লবিং করে যাচ্ছে  সাবেক দুর্নীতিবাজ শিবির নেতা। তাকে আনার ফয়সাল চেষ্টা করিতেছে। শোনা যায় বিভিন্ন মাদরাসা থেকে ফান্ড কালেকশন করিতেছে বিশ্ববিদ্যালয় আসার জন্য রেজিস্ট্রার পদে।

তার রেজিস্ট্রার থাকা কালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কিছু না করলেও প্রায় কোটি টাকা ইনকাম করে নিয়েছে এবং ফয়সালকে অবৈধ সুবিধা দিয়েছে। ফয়সাল যে পরিমান অর্থ সংগ্রহ করেন তার সামান্য পরিমান বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে বাকি অর্থ তার ব্যক্তিগতভাবে রেখে দিয়েছেন, যার হিসাব তিনি দিতে রাজি না, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি নিজেকে বিভিন্ন সময় ভুয়া সহকারি পরিচালক অর্থ  হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসলে ও তার পদবি সেকশন অফিসার ।

সে দীর্ঘ নয় বছর অর্থ ও হিসাব দপ্তরে থেকে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছেন এবং আধিপত্য বিস্তার করেছে।  ব্যক্তিগতভাবে পরিচালক পর্যায়ে যেসব জিনিসপত্র ব্যবহার করেন তা তিনি ব্যবহার করেন । ব্যক্তিগতভাবে নিজ কক্ষে সিসি ক্যামেরা থেকে শুরু করে ল্যান্ড ফোন এছাড়া আই পি এস এর মত বিষয় তিনি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করেন ।

বিশ্ববিদ্যালয় শুরুতে তিনি যখন অর্থ ও হিসাব দপ্তরে ছিলেন সেই সময়  পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের টেন্ডার থেকে নগদ অর্থ  লেনদেন হয়।নগদ অর্থ লেনদেনের সময় পরিচালক মহোদয়  হাতেনাতে ধরে ফেলেন এবং তার বিরুদ্ধে আভিয়োগ দাখিল করেন।  তার বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারের অভিযোগ ছিল কিন্তু সেই অর্থের  অভিযোগ এখনো নিষ্পত্তি হয়নি । ঘুষ ছাড়া বিভিন্ন পার্টি পেমেন্ট হয় না। ঘুষ দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিভিন্ন কাজের টাকা সে পরিশোধ করে দেয়।

২০২০-২০২১ অর্থ বছরে অর্থ দপ্তরের ফয়সাল আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ সরকারি ব্যাংকে বিনিয়োগ না করে SIBL  নামক একটি বেসরকারি ব্যাংকে এফডিআর করেন।যেখান থেকে তিনি ২০ -২৫ লক্ষ টাকা হাতে নিয়েছেন বলে বিভিন্ন তথ্য বেরিয়ে আসে। সর্বশেষ নিয়োগ বানিজ্যের সাথে সে সরাসরি যুক্ত ছিলেন । শিবির নেতা সাবেক রেজিস্ট্রার রেজাউল হক ও ফয়সালের হাত ধরে ৩৫ জনের মধ্যে উত্তরবঙ্গ থেকে বিভিন্ন পদে ২১ জন পায়, এই নিয়োগ দিয়ে ফয়সাল ও সাবেক রেজিস্ট্রার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।