দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: যাকাত ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের অন্যতম। যাকাত ইসলামী সমাজ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অনন্য প্রতিষ্ঠান। একদিকে দরিদ্র, অভাবী ও অক্ষম জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তার গ্যারান্টি; অন্যদিকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে যাকাত। যাকাত সম্পদ পবিত্র করে, বিত্তশালীদের পরিশুদ্ধ করে, দারিদ্র্য মোচন করে, উৎপাদন বৃদ্ধি করে, অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস করে এবং সমাজে শান্তি আনে।

সব ধরনের সম্পদে যাকাত ফরজ হয় না। তবে অন্যান্য সম্পদের মতো ব্যাংক ব্যালেন্স, ফিক্সড ডিপোজিট, বন্ড, শেয়ার, সার্টিফিকেট ইত্যাদিও নগদ টাকা-পয়সার মতোই। এসবের ওপরও যাকাত ফরজ। টাকা-পয়সা ব্যবসায় না খাটিয়ে এমনি রেখে দিলেও তাতে যাকাত ফরজ।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে: পুঁজিবাজার বা স্টক মার্কেটের ক্ষেত্রে শেয়ারকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। (১) কোম্পানিতে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে মুনাফার জন্য ক্রয় করে থাকলে কোম্পানির যাকাতযোগ্য সম্পদের অনুপাতে যাকাত হিসাব করতে হবে। এক্ষেত্রে ধরুন, কোনো ব্যক্তি কোম্পানির শেয়ার কিনেছে ১০০ টাকার।

যাকাত বের করার দিন ওই কোম্পানিকে সে জিজ্ঞেস করতে হবে, কোম্পানির যাকাতযোগ্য সম্পদ কত শতাংশ। কোম্পানি তাকে জানাবে যে তার যাকাতযোগ্য সম্পদ ৩০ শতাংশ। এখন সে যে ১০০ টাকার শেয়ার কিনেছে এই ১০০ টাকার ৩০ শতাংশ যাকাতের জন্য হিসাব করবে তথা ১০০ টাকার ৩০ শতাংশ সমান ৩০ টাকা সে তার অন্যান্য যাকাতযোগ্য সম্পদের সাথে যোগ করে বের করবে।

(২) যদি সে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিক্রয়ের ইচ্ছায় ক্রয় করে থাকে তথা প্রাইমারি মার্কেটে কোম্পানির সাথে বিজনেস করে মুনাফা ভোগ করবে এরকম নয়। বরং সেকেন্ডারি মার্কেটে বিক্রয়ের জন্য ক্রয় করেছে তাহলে যেদিন সে যাকাত বের করবে ওই দিন ওই শেয়ারের বাজারমূল্য কত সেটা তাকে হিসাব করে অন্যান্য যাকাতযোগ্য সম্পদের হিসাবের সাথে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য কয়েকটি মৌলিক শর্ত হলো: (১) মুসলিম হওয়া: কোনো কাফেরের উপর যাকাত ফরজ নয়। মুসলিম দেশে বসবাসকারী কাফেরগণ জিযিয়া বা কর দিবেন যার হিসাব সম্পূর্ণ আলাদা। যাকাত শুধু মুসলিমদের উপর ফরজ। কেননা যাকাত একটি ইবাদত যা দ্বারা মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। তবে কাফেররা পরকালে অবশ্যই জবাবদিহিতার মুখোমুখি হবে।

(২) স্বাধীন হওয়া: গোলাম বা ক্রীতদাসের উপর যাকাত ফরজ নয়। কেননা তারা সাধারণত সম্পদের মালিক হতে পারে না। বরং তাদের সবকিছুই অন্যের অধীন।

(৩) নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া: কোনো ব্যক্তির উপর যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া আবশ্যক।
স্বর্ণের হিসাব অনুযায়ী সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা ৮৫ গ্রাম, যার ২২ ক্যারেটের হিসাব অনুযায়ী বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৪,৫০,০০০ (সাড়ে চার লক্ষ) টাকা অথবা রূপার হিসাব অনুযায়ী সাড়ে বায়ান্ন ভরি বা ৫৯৫ গ্রাম, যার ২২ ক্যারেটের হিসাব অনুযায়ী বর্তমান বা প্রায় ৪০,০০০ (চল্লিশ হাজার) টাকা।

অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ অথবা তৎসম পরিমাণ মূল্য ৪,৫০,০০০ (সাড়ে চার লক্ষ) টাকার অথবা ৫২.৫ ভরি রৌপ্য বা তৎসম পরিমাণ মূল্য ৪০,০০০ (চল্লিশ হাজার) টাকা। টাকার মালিক হলে তার উপর যাকাত ফরজ। এখানে একটি বিষয় মনে রাখা জরুরী যে, ব্যক্তি রুপার হিসাব অনুযায়ী যাকাত দিবে, না-কি স্বর্ণের হিসাব অনুযায়ী যাকাত দিবে, বিষয়টি তার ইচ্ছাধীন।

চাইলে সে রুপার হিসাব অনুযায়ী সাড়ে বায়ান্ন ভরি রৌপ্য বর্তমান বাজারে এর সমমূল্য ৪০,০০০ টাকার মালিক হলে নিজের উপর যাকাত ফরজ মনে করে যাকাত বের করতে পারে। অথবা সে অপেক্ষা করতে পারে স্বর্ণের হিসাব অনুযায়ী নিজের উপর যাকাত ফরজ হওয়া পর্যন্ত তথা বর্তমান বাজারে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণের সমমূল্য ৪,৫০,০০০ টাকার মালিক হওয়া পর্যন্ত।

আমাদের মনে রাখতে হবে যে, যাকাত বের করার বিষয়ে ব্যক্তি স্বর্ণ বা রুপার যে কোনো পদ্ধতিতে যাকাত হিসাব করতে পারবে। তবে ফকীর-মিসকীনের হক্বের প্রতি লক্ষ রেখে রুপার হিসাব অনুযায়ী যাকাত বের করতে হবে।

(৪) সম্পদের এক বছর অতিবাহিত হওয়া: যেদিন ব্যক্তি নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে, সেদিন থেকে এক বছর তাকে হিসাব করতে হবে। এর পর থেকে প্রতি বছর ওই একই তারিখে তাকে যাকাত বের করতে হবে। বিষয়টি ঠিক তেমন, যেমন কোনো ব্যক্তি তার ব্যবসার অর্থবছর হিসাব করে এক হালখাতা থেকে আরেক হালখাতা পর্যন্ত এবং অনুষ্ঠান করে, অনুরূপভাবে যাকাত বের করার জন্য যাকাতবর্ষ হিসাব করতে হবে।

আর সেটা হবে পূর্ণ এক চন্দ্রবৎসর তথা কোনো ব্যক্তি রমজান মাসে নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তাকে ঠিক পরবর্তী রমজান পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তার এই নিছাব পরিমাণ সম্পদের স্থিতিকাল এক বছর অতিক্রম করছে কি-না তা দেখতে হবে। যাকাতযোগ্য সম্পদ কী? আল্লাহ সুবহানাহু তা-আলা যাকাতযোগ্য সম্পদকে চার ধরনের বস্তু দ্বারা হিসাব করা ফরজ করেছেন।

(১) উৎপাদিত শস্য: জমিতে উৎপাদিত শস্য দ্বারা যাকাত দিতে হবে। আবাদি জমিতে যেসব ফসল উৎপদিত হবে। ঐসব ফসলের উপর ইসলাম উশর নির্ধারণ করেছে।

(২) ব্যবসায়িক সম্পদ: যেসব সম্পদের মাধ্যমে কেউ প্রতিনিয়ত অর্থ উপার্জন করছে তথা ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, ঐসব ব্যবসায়িক সম্পদের উপর যাকাত প্রযোজ্য হবে। এক কথায় বর্ধনশীল সম্পদের উপর যাকাত ফরজ। (আল-বাক্বারা, ২/২৬৭)।

(৩) সোনা-রূপা: স্বর্ণ ও রূপা বা এর পরিবর্তে ব্যবহৃত পৃথিবীর যে কোনো কারেন্সি/মুদ্রা হতে পারে। যেমন: টাকা, ডলার, রিয়াল ইত্যাদি। আদান-প্রদানের জন্য স্বীকৃত এরূপ যে কোনো মুদ্রার উপর যাকাত লাগবে। (৪) চতুষ্পদ জন্তু: হালাল চতুষ্পদ জন্তুর উপর নির্ধারিত সংখ্যার হিসাবের আলোকে যাকাত ফরজ হয়ে থাকে।

যাকাতযোগ্য সম্পদের প্রকারভেদ: যাকাতযোগ্য সম্পদকে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যথা— (ক) মৌলিক যাকাতযোগ্য সম্পদ (খ) বাসাবাড়ির যেসব জিনিস যাকাতযোগ্য সম্পদের অন্তর্ভুক্ত নয়। (গ) ব্যবসা-বাণিজ্যের যা যাকাতযোগ্য। (ঘ) ব্যবসা-বাণিজ্যের যা যাকাতযোগ্য নয়।

(ক) মৌলিক যাকাতযোগ্য সম্পদ: (১) ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত উভয় ধরনের স্বর্ণের উপর যাকাত ফরজ। ব্যবহৃত স্বর্ণ যেগুলো ব্যক্তির স্ত্রী ও মেয়ে ব্যবহার করছে, এর যাকাত দিতে হবে। ঠিক তেমনি যে স্বর্ণ অব্যবহৃত অবস্থায় ব্যাংকের লকারে সুরক্ষিত আছে, ওই স্বর্ণেরও যাকাত দিতে হবে।

(২) যেকোনো নগদ ও সঞ্চিত অর্থ, যা ব্যক্তির হাতে লিকুইড বা তরল অবস্থায় আছে এই অর্থের যাকাত দিতে হবে। প্রভিডেন্ট ফান্ড, সঞ্চয়পত্র অথবা ফিক্সড ডিপোজিটসহ ব্যাংক, বিকাশ, রকেট ও অন্য যেকোনো মাধ্যমে জমানো টাকাও যাকাতযোগ্য সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

(৩) একজন ব্যক্তি অন্য কাউকে কর্য হিসাবে দিয়েছেন এমন অর্থ যা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা যাকাতযোগ্য সম্পদ হিসাবে গণ্য হবে এবং তার যাকাত দিতে হবে। যেহেতু এটা মালিকের হাতে না থাকলেও তার মালিকানার অন্তর্ভুক্ত সম্পদ তাই এটাও যাকাতের মধ্যে হিসাব হবে।

(খ) বাসাবাড়ির যে সকল সম্পদ যাকাতযোগ্য নয়: (১) ব্যবহৃত যানবাহন: ব্যবহৃত জিনিসের মধ্যে কেবল স্বর্ণ ও রূপার যাকাত দিতে হয়। আর বাকি যা কিছু আছে তার কোনো কিছুরই যাকাত নেই। যদি কেউ ১০টি বি.এম. ডাব্লিউ গাড়ি ব্যবহার করে তারপরও তার কোনো যাকাত নেই। কেউ যদি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ঘড়ি ব্যবহার করে তাও সেই ঘড়ির যাকাত নেই। ব্যবহৃত কোনো জিনিসের যাকাত নেই।

(২) আসবাবপত্র: গৃহে ব্যবহৃত আসবাবপত্রের উপর যাকাত ফরয নয়। কারো বাড়িতে ১০-১৫টি এসি, বহু ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিনসহ আরো কত দামি দামি আসবাবপত্র থাকে। এগুলো কোনো কিছুর উপর যাকাত ধার্য করা হবে না।

(৩) বসবাসের জন্য বাড়ি: যত বড়ই বাংলো বাড়ি হোক কিংবা যত দামিই বাড়ি হোক না কেন বা কোটি টাকার ফ্লাট হোক যেটা মালিক নিজে বসবাস করার জন্য করেছে, তার উপর কোনো যাকাত নেই। এককথায় নিজের ব্যবহারের জন্য ক্রয় করা কোনো কিছুর উপর যাকাত নেই। শুধু যেটা ব্যবসার জন্য বা পুনরায় বিক্রি করে লাভ করার জন্য ক্রয় করা হয়েছে, তার উপর যাকাত।

(গ) ব্যবসায় সম্পদের মধ্যে যেগুলো যাকাতযোগ্য সম্পদ: (১) কাঁচামাল: ব্যবসায় সম্পদের মধ্যে ফ্যাক্টরির কাঁচামাল যাকাতযোগ্য সম্পদ বলে বিবেচিত হবে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কেউ গার্মেন্টস ব্যবসা করে। গার্মেন্টসের কাঁচামাল হলো সুতা। এখন তার নিকট যে সুতা কাঁচামাল হিসাবে মজুদ আছে, তার বাজারমূল্য অনুযায়ী তাকে যাকাত বের করতে হবে। ধরুন, কেউ বইয়ের ব্যবসা করে, তার কাঁচামাল হবে কাগজ। তার গোডাউনে যত টাকার কাগজ আছে, তার নিছাব পূর্ণের দিন বাজারমূল্য অনুযায়ী যাকাত নির্ধারিত হবে।

(২) তৈরিকৃত পণ্য: বিক্রয়যোগ্য যে কোনো পণ্য যা আপনার দোকানে আছে বা গোডাউনে আছে, তার যাকাত লাগবে। যাকাত বের করার দিনের বাজারমূল্য অনুযায়ী যাকাত বের করতে হবে

(৩) উৎপাদন প্রক্রিয়াধীন পণ্য: সুতা থেকে কাপড় উৎপাদন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত মাঝখানে যে সমস্ত পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এগুলোর বর্তমান বাজারমূল্য হিসাব করে যাকাত দিতে হবে। এককথায় কাঁচামাল থেকে তৈরিকৃত বিক্রিযোগ্য পণ্য পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যের সকল সম্পদের যাকাত লাগবে।

(ঘ) ব্যবসার কাজের মাঝে যেগুলো যাকাতের অন্তর্ভুক্ত নয়:

(১) অফিসিয়াল আসবাবপত্র ব্যবসার কাজে পরিচালিত অফিসের প্রয়োজনে ব্যবহৃত কোনো আসবাবপত্রের যাকাত লাগবে না। যেমন— কম্পিউটার, টেবিল, চেয়ার, এসি, ফ্রিজ ইত্যাদি।

(২) যানবাহন: ব্যবসার কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও পণ্য পরিবহনের গাড়ির উপর কোনো যাকাত নেই। কোম্পানির এক হাজার গাড়ি থাকলেও ওই গাড়ির যাকাত দিতে হবে না।

(৩) মেশিনারিজ : একটি কোম্পানি উৎপাদনের জন্য যে মেশিনারিজ ব্যবহার করে, তার উপর কোনো যাকাত দিতে হবে না। এককথায় কোম্পানির যেকোনো ফিক্সড অ্যাসেট বা স্থায়ী সম্পদের উপর যাকাত প্রযোজ্য নয়।
কর্য, লোন বা ঋণ বিষয়ক: যাকাতের হিসাবে ঋণকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা:- (ক) ব্যক্তির পাওনা (খ) ব্যক্তির দেনা

(ক) পাওনা বা প্রদত্ত কর্য: অন্য কেউ ঋণ নিয়েছে। মালিক তাকে কর্য দিয়েছে। এখন সে তার কাছ থেকে টাকা পাবে। এমন প্রাপ্য কর্যকে পাওনা বলে। কোনো ব্যক্তি টাকা ধার দেওয়ার পরে যদি সেটা ফেরত পাওয়ার সম্ভবনা থাকে, তাহলে সেই প্রদত্ত ধারের টাকার উপর যাকাত হিসাব করতে হবে। তবে যাকাত আদায়কারী ব্যক্তি চাইলে উক্ত পাওনা হতে প্রতি বছর যাকাত আদায় করতে পারে। অথবা যেদিন সে তার পাওনা টাকা হাতে পাবে, সেদিন পিছনের যত বছরের বাকি যাকাত আছে সব বাকি যাকাত হিসাব করে বের করে দিবে। তবে প্রতি বছর যাকাত বের করাই উত্তম।

(খ) প্রদেয় কর্য বা দেনা: মালিক লোন নিয়েছে। তাকে কিস্তিতে বা একবারে সেই লোনের টাকা পরিশোধ করতে হবে। এটাকে দেনা বলা হয়। এই দেনার টাকা যাকাতের হিসাব থেকে বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে ফক্বীহগণ এই কর্যকে দুই ভাগে ভাগ করেছে।

(১) পারিবারিক প্রয়োজনে বা জরুরী প্রয়োজনে ব্যক্তি ঋণ বা কর্য করতে বাধ্য হয়েছে।

(২) ব্যক্তির জরুরী কোনো পারিবারিক প্রয়োজন নেই। কিন্তু সে প্রয়োজন অতিরিক্ত কাজের জন্য অথবা নিজের ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধির জন্য কর্য বা ঋণ নিয়েছে।

হুকুম: দ্বিতীয় প্রকার কর্য যাকাতের হিসাব থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। কারণ এই ঋণ বা কর্য যাকাতের হিসাব থেকে বাদ দিলে কোনো ব্যবসায়ীর উপর আর যাকাত ফরজ হবে না। তার কাছে যাকাতযোগ্য সম্পদ বলে কিছুই বাকি থাকবে না। তখন গরীব-মিসকীনের হক্ব নষ্ট হবে। সুতরাং যাকাতের হিসাব থেকে শুধু ওই ঋণ বা কর্য বাদ যাবে, যে ঋণ বা কর্য পারিবারিক প্রয়োজনে বা জরুরী প্রয়োজনে সংগ্রহ করা হয়েছে।
যাকাতের হিসাব থেকে ঋণ বাদ দেওয়ার ধরন: পারিবারিক প্রয়োজনে নেওয়া এই ঋণ যাকাতের হিসাব থেকে দুইভাবে বাদ দেওয়া যেতে পারে। যথা

(ক) ঋণ যদি একবারে পরিশোধযোগ্য হয়।

(খ) ঋণ যদি কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য যদি ঋণ এমন হয় যে কেউ ১ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছে এবং সে এটা একবারেই পরিশোধ করবে, তাহলে যেদিন সে যাকাত বের করবে সেই দিন ১ লক্ষ টাকা হিসাব থেকে বাদ দিয়ে দিবে। আর যদি এরকম হয় যে, সে কিস্তিতে পরিশোধ করবে (অর্থাৎ মাসিক ১,০০০/= কিস্তি পরিশোধ করবে) তাহলে যেদিন সে যাকাত বের করবে, ওই দিন তার এক কিস্তি বছর বা এক যাকাত-বর্ষে যত কিস্তি হয় (এক যাকাত বর্ষ সমান ১২ কিস্তি) ১২ কিস্তি সমান ১২ হাজার টাকা বাদ দিয়ে সে বাকি টাকা যাকাতের অন্তর্ভুক্ত করবে এবং সেই টাকার যাকাত আদায় করবে

যাকাতের সাথে সংশ্লিষ্ট আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় : যাকাতের সাথে সংশ্লিষ্ট আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেগুলো নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন দেখা যায়। যথা:

যাকাতযোগ্য সম্পদে কি পৃথক পৃথকভাবে এক বছর অতিক্রান্ত হওয়া আবশ্যক?একই শ্রেণির সব ধরনের যাকাতযোগ্য সম্পদ পৃথক পৃথকভাবে এক বছর অতিক্রান্ত হতে হবে বিষয়টা এমন নয়। বরং একই শ্রেণির সব যাকাতযোগ্য সম্পদ একত্রিত করে নিছাব ধরা হবে এবং নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক অবস্থায় এক বছর অতিক্রান্ত হলে সকল যাকাতযোগ্য সম্পদের উপর যাকাত ফরয হবে।

অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি স্বর্ণ, ব্যাংকের টাকা, নগদ অর্থ সবকিছু একত্র করে হিসাব করে দেখল যে, সে নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছে। এক বছর পর পুনরায় এভাবে সকল যাকাতযোগ্য সম্পদ হিসাব করে নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকলে সে নিজের উপর যাকাত ফরয মনে করে নিবে। এক্ষেত্রে স্বর্ণকে আলাদাভাবে নিছাব পরিমাণ হতে হবে না বা আলাদাভাবে এক বছর অতিক্রান্ত হতে হবে না।

সেক্ষেত্রে যাকাত বের করার আগের দিনও যদি কেউ সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার মালিক হয় তাহলে সেই সাড়ে ৪ লক্ষ টাকারও যাকাত লাগবে যদিও ওই সাড়ে ৪ লক্ষের উপর এক বছর অতিক্রম হয়নি। এক বছর অতিক্রান্ত হওয়া জরুরী শুধু নিছাব পরিমাণ সম্পদের উপর, সকল সম্পদউল্লেখ্য, অবশ্যই সেই অতিরিক্ত যুক্ত হওয়া টাকা যেন ওই ব্যবসায়িক সম্পদ থেকে হয়, যার উপর বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। একদম নতুন কোনো উৎস থেকে আসলে তা ধর্তব্য হবে না। যেমন— যাকাত বের করার আগের দিন সে তার বাবার সম্পদের উত্তরাধিকারী হলে সেই সম্পদ যাকাতের হিসাবের মধ্যে আসবে

নিছাব একবার ছুটে গেলে কী করবে? নিছাব একবার ছুটে গেলে পুনরায় নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে নতুন করে সেদিন থেকে নিছাবের হিসাব ধার্য হবে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, গত বছর রামাযানে কেউ নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলো এবং ঠিক এক বছর পর রামাযানে গিয়ে দেখল তার নিকট নিছাব পরিমাণ সম্পদ বা টাকা নেই। তাহলে তার এ বছরের নিছাব কেটে গেছে।

যেহেতু তার নিছাব পরিমাণ সম্পদের এক বছর অতিক্রান্ত হলো না, সেহেতু তার নিছাব কেটে গেছে। পরবর্তীতে যখন সে নতুন করে নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে, তখন থেকে সে আবার নতুন করে হিসাব ধরবে এক বছর অতিক্রান্ত হওয়া পর্যন্ত। আগেরবার নিছাব পরিমাণ মালিক হওয়ার হিসাব আর নতুন হিসাবের মধ্যে গণ্য হবে না। বরং পুনরায় সে যখন নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে, তখন থেকে আবার এক চন্দ্র বছর তাকে হিসাব করতে হবে।

বছরের মাঝে নিছাব কমে গেলে করণীয়: বছরের মাঝে কোনো সময় নিছাবের কম-বেশি হওয়া ধর্তব্য নয়। হিসাবের তারিখে নিছাব থাকলেই চলবে। এখানে বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝানোর চেষ্টা করা হলো। ধরুন, জানুয়ারি মাসে কেউ স্বর্ণের নিছাব অনুযায়ী সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার মালিক হলো অথবা রৌপ্যের নিছাব অনুযায়ী ৪০ হাজার টাকার মালিক হলো অর্থাৎ সে নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলো।

এপ্রিল মাসে গিয়ে তার টাকা কমে গেল। এপ্রিল মাসে টাকা গিয়ে দাঁড়ালো স্বর্ণের দাম অনুযায়ী ২ লক্ষ টাকা এবং রৌপ্যের দাম অনুযায়ী ৩০ হাজার টাকা। তাহলে এখন তার নিকট নিছাব পরিমাণ সম্পদ নেই। জুলাই মাসে গিয়ে আরো কমে গেল। স্বর্ণের দামের হিসাব অনুযায়ী ১ লক্ষ ও রৌপ্যের দামের হিসাব অনুযায়ী ২৫ হাজার তথা সে এখন নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নয়।

অক্টোবর মাসে গিয়েও সে নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়নি। আবার জানুয়ারিতে গিয়ে ঠিক গত বছর যে তারিখে নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছিল, জানুয়ারিতে গিয়ে ওই তারিখে সে তার নিকটে থাকা সম্পদ হিসাব করে দেখল স্বর্ণের দাম অনুযায়ী সাড়ে ৪ লক্ষ এবং রৌপ্যের দাম অনুযায়ী ৪০ হাজার টাকা আছে। তাহলে তার উপর যাকাত ফরয হয়ে গেছে।

নিছাবের বছরের শুরু এবং শেষে নিছাব থাকলেই যাকাত ফরয। বছরের মাঝখানে সে ফকীর হয়ে যেতে পারে তাতে কোনো সমস্যা নেই। যেদিন নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলো, সেদিন থেকে ঠিক এক বছর পর ওই তারিখে নিছাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে তার উপর যাকাত ফরয হয়ে যাবে।

জমির প্লট বা ফ্লাট: জমির প্লট বা ফ্লাটের ক্ষেত্রে মৌলিক নীতিমালা হলো যেগুলোকে ভাড়া দেওয়া হয় ওই সম্পদের উপর যাকাত দিতে হবে না। তবে ওই ভাড়ার টাকা যদি লিকুইড মানি বা নগদ অর্থ হয়ে ব্যক্তির নিকটে আসে, তাহলে যেদিন সে যাকাত বের করবে ওই দিনের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত যত টাকা তার নিকট নগদ হিসাবে আসবে, সেটা বাসা ভাড়া থেকে আসুক অথবা অন্য যে জায়গা থেকেই আসুক সেই টাকার উপর তাকে যাকাত দিতে হবে। জমি প্লট-ফ্লাট প্রোপারটির তখনই যাকাত দিতে হবে, যখন ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয় করা হয়। তথা ক্রয় করা হয়েছে বিক্রয়ের জন্য।

ক্রয় করার সময় নিয়্যত ছিল এটা বিক্রয় করে লাভ করা হবে। এই ক্ষেত্রে ক্রেতার নিয়্যতই ধর্তব্য। নিয়্যেতের উপর বিষয়টি নির্ভরশীল। তবে ক্রয় করার সময় যদি কোনো নিয়্যত না থাকে যে বিক্রি করব, ব্যবসা করব, রেখে দেব, আবাদ করব ইত্যাদি কোনো নিয়্যত নেই এমনিতেই ক্রয় করেছে, তাহলে সেই ক্ষেত্রে তার উপর যযদি কেউ ব্যবসা করার জন্য ক্রয় করে থাকে তথা বিক্রয় করার জন্য ফ্ল্যাট কিনেছে বা বিক্রয় করবে এই জন্য ফ্ল্যাট বানিয়েছে কিংবা বিক্রয় করবে এই জন্য সে জমি কিনেছে, তাহলে এক্ষেত্রে ক্রয়মূল্য ধর্তব্য নয়; বরং যাকাত বের করার সময়ের বাজারমূল্য ধর্তব্য।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কেউ এক কাঠা জমি ঢাকায় কিনেছিলেন ২০০০ সালে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে। আজকে ২০২১ সালে ঢাকার বুকে এক কাঠা জমির দাম ১ কোটি টাকা, তাহলে সে ওই জমির ১ কোটি টাকা হিসাব করবে। এক কথায় তাকে যাকাত বের করার দিনের জমির বাজারমূল্য অনুযায়ী যাকাত দিতে হবে। প্রত্যেকটি জিনিস যা সে বিক্রয় করে লাভ করার জন্য ক্রয় করেছে (ব্যবসা করার জন্য) সেটা যেই দিন যাকাত বের করবে সেই দিনের বাজারমূল্য হিসাব করে যাকাতের অন্তর্ভুক্ত কউল্লেখ্য, পৈতৃকসূত্রে প্রাপ্ত জমির যাকাত দিতে হবে না।

কারণ এটা বিক্রয়ের জন্য ক্রয় করা হয়নি। এটা সে পৈতৃকসূত্রে প্রাপ্ত হয়েছে। এর উপর তাকে যাকাত দিতে হবে না। এরকম যে কোনো জমি সে এমনিতেই ক্রয় করেছে, বিক্রয় করে লাভ করবে এমন নিয়্যতে নয়; সে জমির উপর যাকাত দিতে হবে না। যে জমিতে আবাদ করা হয় এবং তা থেকে ফসল ভোগ করা হয়, ওই জমির মূল্যের উপর কোন যাকাত দিতে হবে না। তবে আবাদি জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের উশর দিতে হবে।

মাছের ঘের, বিক্রয়ের গরু, ভাড়া দেওয়া গাড়ি: গরু বা খাসি লালনপালন করলে সেটার যাকাত নির্ধারিত হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক হিসাব রয়েছে। যেটা আমরা অন্যত্র আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। তবে গরু ও খাসি ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করলে যেদিন যাকাত বের করবে, সেদিনের বিক্রয়যোগ্য গরু-খাসির বাজারমূল্য অনুযায়ী যাকাত বের করতে হবে। এক্ষেত্রে গরু-খাসির নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা ধর্তব্য নয়। গরু-খাসির নির্দিষ্ট সংখ্যা শুধু স্থায়ীভাবে লালনপালনের ক্ষেত্রে প্রযধরা যাক, কেউ একটি গরু ক্রয় করেছে বিক্রয় করার জন্য। বিক্রয় করে লাভ করবে।

তাহলে যেদিন যাকাত বের করবে ওই দিন ওই গরুর বাজারমূল্য যা সেটা যাকাতের জন্য হিসাব করতে হবে। কেননা তার ব্যবসায়িক সম্পদের মতো ওই গরুটাও তখন একটা ব্যবসায়িক সম্পদ। আর মাছের ক্ষেত্রে পুকুরে বা ঘেরে মাছ চাষ করলে কেউ যদি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করে এবং বিক্রয় করে সেখান থেকে ইনকাম করে, সেক্ষেত্রে তার লিজ নেওয়া পুকুরগুলো ফিক্সড অ্যাসেট বা মূল মেশিনারিজ হিসাবে গণ্য হবে।

এজন্য পুকুরগুলোর দামের যাকাত দিতে হবে না। কিন্তু যে জিনিসটা সে আবাদ করছে তথা মাছ যেটা তার মূল ব্যবসায়িক সম্পদ, সেটার বর্তমান বাজারমূল্য অনুমান করে কত মাছ আছে, কেমন দামের মাছ আছে, সেটার উপর হিসাব করে যাকাত বের করতে হবে। এটাই বেশি সঠিক সিদ্ধান্ত এবং উপযুরিক্সা, অটোরিক্সা, কার, মাইক্রোবাস, বাস, ট্রাক ইত্যাদি ভাড়ায় চালিত গাড়ির ক্ষেত্রে কোনো যাকাত লাগবে না; যদিও তা সংখ্যায় ৫০-১০০টি বা এর চেয়ে বেশি হয়।

গাড়ির দামের উপর যাকাত লাগবে না; বরং গাড়ি থেকে যে নগদ অর্থ বা লিকুইড মানিটা ব্যক্তির কাছে আসে সেই অর্থের উপর যাকাত দিতে হবে। তবে গাড়ি যদি ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা, গাড়ি ম্যানুফ্যাকচারিং ব্যবসা করে, যদি কেউ অটো রিক্সা তৈরি করে, তাহলে তার শো-রুমে যতগুলো গাড়ি আছে, যতগুলো মটরসাইকেল আছে এবং যতগুলো তৈরির প্রক্রিয়াধীন আছে, সেগুলো তার কাঁচামাল হিসাবে গণ্য হবে। এজাতীয় সবগুলোর বর্তমান বাজারমূল হিসাব করে যকাত দিতে হবে।

যাকাতের সর্বশেষ হিসাব: মোটকথা, কোনো ব্যক্তি যেদিন যাকাত বের করবে, সেই দিন তার যাকাতযোগ্য যত সম্পদ আছে, সেগুলো তাকে একত্রে হিসাব করতে হবে। যেমন প্রথমত নগদ অর্থ যত আছে তা জমা করবে, ব্যবসায়িক কাঁচামাল যত আছে, দোকানে যত পণ্য আছে, সেগুলোর হিসাব করবে। স্ত্রী ও কন্যার ব্যবহৃত স্বর্ণ যত আছে, সেটা হিসাব করবে। ব্যাংকে যত টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ জমা আছে, প্রভিডেন্ট ফান্ডে যত জমা আছে, সঞ্চয়পত্র যত আছে, সব জমানো সম্পদ একত্রে করে দেখা গেল তার নিকট এখন ১০ লক্ষ টাকা সমমূল্যের যাকাতযোগ্য সম্পদ আছে।

এই ১০ লক্ষ টাকার উপর তাকে যাকাত দিতে হবে। তবে ১০ লক্ষ টাকা থেকে যেটা বাদ যাবে, সেটা হলো কর্য বা ঋণ। এখন ব্যক্তির পরবর্তী এক বছরের জন্য ঋণের কিস্তি ধরা হলো ১ লক্ষ টাকা এবং তার এককালীন পরিশোধ করতে হবে ১ লক্ষ টাকা। এই ২ লক্ষ টাকা মোট হিসাব থেকে বাদ দিতে হবে। এখন তার নিকট নিট অর্থ থাকছে ৮ লক্ষ টাকা।

এই ৮ লক্ষ টাকার ২.৫০ ভাগ হারে যাকাত বের করতে হবে তথা প্রতি ১০০ টাকায় ২.৫০ টাকা। প্রতি ১ হাজার টাকায় ২৫ টাকা। প্রতি ১ লক্ষ টাকায় ২ হাজার ৫০০ টাকা। এক কথায় যাকাতযোগ্য সম্পদের ২.৫ ভাগ হারে যাকাত বের করতে হয়। অর্থাৎ ৮ লক্ষ টাকার যাকাত ২০ হাজার টাকা বের করতে হবে। যাকাতের সম্পূর্ণ অর্থকে ৪০ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল যা হবে, তাই হচ্ছে যাকাতের পরিমাণ।

আশা করি পুরো যাকাতের বিষয়টা আপনাদের নিকটে পরিষ্কারসুধী পাঠক! যাকাত সম্পদের রক্ষাকবচ। যাকাত আদায় না করলে সম্পদের বরকত রক্ষিত হয় না। যাকাত সম্পদকে বৃদ্ধি করে। যাকাত সম্পদকে পবিত্র করে। যাকাত আদায় করা এত গুরুত্বপূর্ণ যে, যদি যাকাত গ্রহণ করার মতো কেউ না থাকে তাহলে যাকাতের অর্থ ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে। তারপরও যাকাত দিতে হবে। নইলে পরকালে আমাদের জন্য ভয়ংকর বিপদ হবে। যাকাতের অর্থ বাড়িতে রাখা গোখরা সাপ রাখার চাইতেও বিষাক্ত ও ভয়ংকর।