মোঃএকরামুল হক, চট্টগ্রাম, দেশ প্রতিক্ষণ: বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিন ঢাকতে তার উপর আবারও লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্ল্যাব ডাস্টবিন নির্মাণের প্রকল্প নেন পৌর প্রকৌশলী বেলাল আহমেদ খান। সদ্য যোগদান করা পৌর প্রশাসক আলহাজ্ব মনজুরুল আলম চৌধুরী দায়িত্ব নেয়ার আগেই কৌশলে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিন মাটি চাপা দেয় সাবেক পৌর প্রশাসক ও পৌর প্রকৌশলী বেলাল এবং মনোয়ার, দাবি পৌরবাসীর।

সম্প্রতি সেই আধুনিক ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিন ঢাকতে কৌশলে ভরাট করে তার উপর ইটের গাঁথুনি দিয়ে নতুন আরেকটি স্ল্যাব ডাস্টবিন নির্মাণ করার সময় অপরিকল্পিত ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিন সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বালু দিয়ে আধুনিক ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিনের ৫ ফুট গভীর ৪টি হোল ভরাট করে তার উপর ইটের গাঁথুনি দিয়ে ড্রেনের উপর স্ল্যাব বসিয়ে এসিল্যান্ড অফিস ও সদর ইউনিয়ন ভুমি অফিসের সীমানা দেয়াল ঘেঁষে লম্বা ১০ফুট প্রশস্ত ৫ ফুট সমান জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলার স্থান তৈরী করেন দুই ব্যক্তি।

কথা হয় তাদের সাথে, তারা বলেন এই কাজটির ঠিকাদার মনোয়ার হোসেন। বেলাল স্যার এবং এসিল্যান্ড স্যার এইভাবে কাজ করতে বলেছেন। যে গর্ত কিংবা ৪টি হোল ছিলো তা বালু দিয়ে ভরাট করে তার উপর ইটের গাঁথুনি করেছি এবং এখন প্লাস্টারের কাজ চলছে। আর ১/২ দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

পৌর প্রকৌশলীর এমন কান্ড দেখে জনমনে কানাঘুঁষা চলছে। অহেতুক ৫ লাখ টাকা নষ্ট করে সেটা ঢাকতে আবারও লাখ টাকার টেন্ডারবিহীন প্রকল্প। এগুলো নির্বাচনবিহীন পৌরসভার বলেই পৌর প্রশাসক ও পৌর প্রকৌশলীর কর্মকাণ্ড। আজ নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকলে টাকার এরকম অপচয় হতো না। এমনটাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পৌরবাসিন্দারা।

পৌরবাসিন্দারা আক্ষেপ ও ক্ষোভ নিয়ে বলেন, এবার আপনারাই দেখেন পৌরসভার কি অবস্থা? যে ৫ লাখ টাকা নষ্ট করলেন বেলাল আহমেদ খান সেই টাকা কি তিনি নিজের পকেট থেকে দেবেন? যদি না দেন তাহলে আপনি কিসের ইঞ্জিনিয়ার? ধরুন নষ্ট করা ৫ লাখ টাকা পৌরবাসির টাকা না, তবে সরকারের টাকা তো, তাহলে সরকার আপনাকে টাকা কিংবা বেতন দিয়ে রাখলেন কেন? তাহলে তো আপনি সরকার কিংবা দেশের শত্রু! সরকারি কর্মকর্তাদের বদলি প্রথা বিলীন হয়ে যাওয়ায় শিকর গেজে গাছের গোড়া থেকে পাতা পর্যন্ত ছেয়ে যায় দূর্নীতি তেজ।

যার দৃষ্টান্ত হলো আমাদের পৌরসভার অবস্থা। সবাই বদলি হয় কিন্তু আমাদের বেলাল আহমেদ খান সাহেব ফেবিকলের গামে আঁটকে যায়। যা বিস্ময়কর ব্যাপার বলে মনে হয়। আর মনোয়ার হলো বেলাল আহমেদ খান এর ক্যাশিয়ার। শুধু পৌরবাসিরা নন, কর্মচারী থেকে সচিব পর্যন্ত সবাই বেলাল আর মনোয়ার এর কাছে জিম্মি।

এদিকে পৌরসভায় নতুন প্রশাসক হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মনজুরুল আলম চৌধুরী কে নিয়োগ দেয়ায় পৌর বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তির আমেজ দেখা যায়। এবার বেলাল এবং মনোয়ার কে কড়ায় গন্ডায় হিসাব দিতে হবে পৌর প্রশাসক কে। পৌর প্রশাসক অনেক আগে থেকেই বেলাল এবং মনোয়ার সিন্ডিকেটের কার্যক্রম জানেন তাই ধরবেন এমন আশাবাদী পৌর বাসিন্দারা।

৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিন ভরাট করে তার উপর ময়লা আবর্জনা স্তূপ করার জন্য যে ডাস্টবিন নির্মাণ করা হয়েছে সে বিষয়ে সুপারভাইজার ও ঠিকাদার মনোয়ার হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কতটা ব্যয় হয়েছে তা এখন মনে নেই। দেখে বলতে হবে। আমাকে ইঞ্জিনিয়ার বেলাল আহমেদ খান আধুনিক ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিন ভরাট করতে বলেছেন তাই করেছি।

পৌরসভার সহায়ক কমিটির সদস্য আলী আজম চেয়ারম্যান নির্বাচন না হওয়ায় পৌরসভার এমন অবস্থা বলে কৌশলে এড়িয়ে গেলেও আরেক সহায়ক কমিটির সদস্য জাফর কিছু জানেন না বলে পাশকাটিয়ে পৌরসভায় আসতে বলেন এবং তখনই ফাইল দেখা যাবে! পৌরসভার সচিব বিপ্লব চন্দ্র মুহরী বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। যা জানেন প্রকৌশলী বেলাল আহমেদ খান। ওনাকে (বেলাল আহমেদ খান) ফোন করেন। তিনিই ভালো বলতে পারবেন।

লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিন ভরাট করে আবারও লাখ টাকার প্রকল্প নেওয়ায় বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি। এরপর আবারও ফোন করলে তিনি রিসিভ করে মিটিংয়ে আছি বলে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করেন। হাটহাজারী পৌরসভার প্রশাসক আলহাজ্ব মনজুরুল আলম চৌধুরী বলেন, আমি ব্যস্ত থাকার কারণে সেটি জানতে পারিনি। আমি খুব দ্রুত সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবো।