দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্যোক্তা পরিচালক আজিজ মোহাম্মদ ভাই কোম্পানিটির ২৭ লাখ শেয়ার কিনেছেন। যার বাজার মূল্য ৪০ কোটি টাকারও বেশি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালক আজিজ মোহাম্মদ ভাই গত ৪ মার্চ ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি ডিএসইর পাবলিক মার্কেট থেকে ২৭ লাখ শেয়ার কিনবেন।

৩০ কর্মদিবসের মধ্যে ঘোষিত শেয়ার কেনার কথা। কোম্পানির ওই পরিচালক ঘোষিত সময়ের মধ্যে ২৭ লাখ শেয়ার কিনেছেন। আলোচ্য সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ছিল ১৪৮ টাকা থেকে ১৫৫ টাকা। বর্তমানে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের কাছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিস্কুট প্রস্তুতকারকের ১৫.৫৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

কোম্পানি সচিব মিন্টু কুমার দাস বলেন, চেয়ারম্যানের শেয়ার কেনার সিদ্ধান্তটি তার ব্যক্তিগত বিষয়। তবে কোম্পানির অভ্যন্তরে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় জানা যায়, সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে শেয়ার কিনে পাবলিক মার্কেটে ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। চলমান শেয়ার ক্রয় এই কৌশলগত উদ্যোগের অংশ।

বর্তমানে স্পন্সর ও পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে কোম্পানির ৪৪.৬৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে, ৫৫.৩৪ শতাংশ শেয়ার স্টক এক্সচেঞ্জে ফ্রি-ফ্লোট হিসাবে রয়েছে। এর আগে গত বছরের ২৩ জুলাই অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়। কোম্পানিটি ১৯ অক্টোবর তার বোন নুরজাহান হুদ্দাকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। দুজনেই দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১৮ সালে কোম্পানির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ভাই এবং ২০২৩ সালে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোবারক আলীর মৃত্যুর কারণে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের দুটি প্রধান নেতৃত্বের পদ শূন্য হয়। গত বছরের জুন মাসে কোম্পানিটি আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের ছেলে আসর আজিজ এম ভাইকে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজে ২ শতাংশ শেয়ারের মালিক আম্বি লিমিটেড কর্তৃক মনোনীত পরিচালক হিসাবে নিয়োগ দেয়। এছাড়াও আজিজের প্রয়াত ভাই রাজা মোহাম্মদ ভাইয়ের ছেলে আহাদ মোহাম্মদ ভাইকে শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ইতিমধ্যে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেকর্ড রাজস্ব অর্জন করেছে। এর আর্থিক বিবৃতি অনুসারে, আয় বছরে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা হয়েছে, যা কোম্পানির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। গত তিন বছরে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের পণ্যের পোর্টফোলিওকে বৈচিত্র্যময় করতে এবং ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য প্রায় ১৫৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।

তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে কোম্পানিটির রাজস্ব ৬ শতাংশ কমে ১ হাজার ২৮৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এই অর্থবছরের প্রথমার্ধের শেষ নাগাদ অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ১১৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা এক বছর আগে ছিল ৪৫ শতাংশ।