ড. তারেকস্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা: সরকারের শুদ্ধিতার ও সামঞ্জস্যতা বজায় রাখার জন্য বিরোধীদলের কোন বিকল্প নেই। দশম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ এক তরফা জয়ী হলেও বিরোধীদলহীন নির্বাচনকে কখনই গণতান্ত্রিক পর্যায়ে ফেলা সম্ভব নয়।

বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রহমান। এই অনুষ্ঠানে অন্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম।

ঐকমত্যের সরকারের বৈধতা প্রসঙ্গে ড. তারেক বলেন, বিরোধীদল ব্যতিরেকে নির্বাচন কখনই ঐকমত্যের পর্যায়ে আসে না। আওয়ামী লীগ জাসদ, ওয়াকার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি ও জেপিকে নিয়ে নির্বাচন করে।

বাংলাদেশের নির্বাচনি ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় সংসদ গঠনে জাতীয় পার্টি বাদে বাকি তিনটি দলের ভোট সংখ্যা খুবই সামান্য। এক্ষেত্রে সরকারকে ঐক্যমত্যের বলা গেলেও বাস্তবে জাতীয় ঐক্য মত্যের ব্যাপারে প্রশ্ন আছে।

এই প্রসঙ্গে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, যদিও অর্ধেকেরও বেশি ভোটা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নি কিন্তু এই নির্বাচনে প্রধানদল ও বিরোধীদলের উপস্থিতি প্রমাণ করে এই সরকার ঐকমত্যের। তারপরও একটা প্রশ্ন থেকে যায় সেটা হল প্রধান বিরোধীদল।

প্রধান বিরোধীদল বিএনপি যদি আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে তবেই সরকার ঐকমত্যের সরকার হিসেবে আখ্যায়িত হবে। প্রধানত সবদলকে নিয়ে ঐকমত্যের সরকার গঠনে সরকারের উদ্যেগ প্রয়োজন।

ড. তারেক আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে দশম জাতীয় সংসদ অন্যতম ব্যতিক্রমি অধ্যায়। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত বিরোধী দল কিভাবে সরকারের সমালোচনা করবে? তিনি এমন প্রশ্ন রেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, এক অর্থে সরকার অন্য অর্থে বিরোধীদল এটাই প্রমাণ করে দশম সংসদ গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। দশম জাতীয় সংসদ জগাখিচুড়ি সমতুল্য। গণতন্ত্রের যাত্রায় এই নির্বাচন একটা বড় বাধা এবং এটা বাজে দৃষ্টান্ত।

দেশি বিদেশি মহলের গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, পৃথিবীর রাজনীতির ইতিহাসে বাংলাদেশই একমাত্র নজিরবিহীন উদাহরণ তৈরি করেছে। বিরোধীদল বরাবরই সরকারের সমালোচক।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এক অপরের বিরোধীদল থাকাবস্থায় সংসদে আসার প্রবণতা মোটামুটি কম। সেই অর্থে বাংলাদেশে সক্রিয় বিরোধীদল কখনই ছিল না। গ্রহণযোগ্যতা তখনই স্বার্থকতা পায় যখন জনমনে স্বস্থির আস্থা তৈরি হয় ।

শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নকরণ, অর্থনীতির চাকা সচলীকরণ এবং সংলাপের দরজা উন্মুক্ত রাখাই যেন হয় সরকারের একনিষ্ঠ প্রত্যয়।এই প্রত্যয় ঐকমত্য সরকার গঠনের একমাত্র চাবিকাঠি।