helecapterদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ার রেজু খালে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার মূল কারণ হিসেবে সেলফি তোলাকে দায়ী করা হলেও সিভিল অ্যাভিয়েশন থেকে বলা হচ্ছে এখনও ঘটনাটি তারা তদন্ত করছেন। তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত  এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তারা জানান, সম্পূর্ণ তদন্ত শেষে তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই এ বিষয়ে কথা বলবেন।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে ইনানি নামিয়ে দিয়ে ফেরার পথে কক্সবাজারের উখিয়ার রেজু খালের মোহনায় একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। দরজা খুলে সেলফি তুলতে ও ভিডিও করতে গিয়েই হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে বলে পাইলটের বরাত দিয়ে জানিয়েছিলেন কক্সবাজারের উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের। দুর্ঘটনায় বিজ্ঞাপনী সংস্থা অগিলভি অ্যান্ড ম্যাথার এর কর্মকর্তা শাহ আলম নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন হেলিকপ্টারের পাইলটসহ আরও ৪ জন।

এদিকে, হেলিকপ্টারটির চিফ পাইলট উইং কমান্ডার শফিকুল রহমানের যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি অসুস্থ থাকায় কথা বলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন মেঘনা এভিয়েশনের কর্মকর্তা (অ্যাকাউন্ট কাস্টমার সার্ভিস) মনজুল  আলম।

শনিবার সিভিল অ্যাভিয়েশনের পক্ষ থেকে তিন কর্মকর্তা মেঘনা অ্যাভিয়েশনে যান এবং সেখানে তারা চিফ পাইলট উইং কমান্ডার শফিকুল রহমান এবং মেঘনা অ্যাভিয়েশনের ফ্লাইট অপারেশন অফিসার সাইফুল ইসলামের সঙ্গে পৃথকভাবে তদন্ত কমিটির প্রধানসহ গ্রুপ ক্যাপ্টেন জাফর আহমেদ এবং সিভিল অ্যাভিয়েশনের সহকারী পরিচালক আতাউল্লাহ হাশমী দেখা করে এ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চান।

মেঘনা অ্যাভিয়েশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘পাইলট শফিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে তারা হেলিকপ্টারের দরজা খোলার কারন কী, কী পরিস্থিতিতে তারা দরোজা খুলেছিলেন, কিংবা খুলতে বাধ্য হয়েছিলেন কিনা এবং দুর্ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে আসা কিছু রেকর্ডসামগ্রী নিয়ে তাদের প্রশ্ন করেছেন।’

উল্লেখ্য, গতকাল দুর্ঘটনা ঘটার পর গ্রুপ ক্যাপ্টেন জাফর আহমেদ এবং আতাউল্লাহ হাশমীসহ সিভিল অ্যাভিয়েশনের কয়েকজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনাস্থল থেকে রেকর্ড হিসেবে পাওয়া সবকিছু তারা নিয়েও এসেছেন।

এদিকে, সিভিল অ্যাভিয়েশনের সহকারী পরিচালক আতাউল্লাহ হাশমী বলেন, ‘গতকালকের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে, তারা এখনও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেয়নি। প্রতিবেদন না পাওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা বলতে পারবো না কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন পাবার পরও সিভিল অ্যাভিয়েশনের এআইজি (অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ) সেটি যাচাই বাছাই করবে, নিহত ব্যক্তির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর সেই রিপোর্ট দেখবে, ঘটনাস্থলে যারা সাক্ষী ছিল তাদের সঙ্গে কথা বলবে, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া আলামতগুলো যাচাই-বাছাই হবে, পাইলট, ক্রুসহ অন্য যারা যাত্রী ছিলেন, তাদের সবার সঙ্গে কথা বলেই কেবল হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ বলা যাবে। সিভিল অ্যাভিয়েশন ঘটনাস্থলেও ছিল না, তারা যায়নি ওই হেলিকপ্টারে করে। কিছুই দেখেনি। সুতরাং যারা দরোজা খোলার সংবাদ সিভিল অ্যাভিয়েশনের বরাতে প্রচার করছে, তারা ভুল করছে।’

এদিকে, মেঘনা অ্যাভিয়েশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের এই হেলিকপ্টারটি প্রতিনিয়ত যাত্রী বহন করে। তবে শুক্রবারের ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। এখনও আমরা বলতে পারছি না, ঠিক কী কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।২০১৫ সালে আমেরিকা থেকে হেলিকপ্টারটি আনা হয়েছে আমেরিকান কোম্পানি ‘অক্সটোন-কানাডা’ থেকে।