doreen-powerদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের কোম্পানি ডোরিন পাওয়ার জেনারেশনস অ্যান্ড সিষ্টেমস বছারন্তে কয়েক শত গুন বেশি মুনাফা বাড়লেও নাম মাত্র ডিভিডেন্ড দিয়ে বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারনা করেছে। কোম্পানিটি গত বছরের তুলনায় এবার ডিভিডেন্ড কম দিয়েছে। অথচ কোম্পানিটির মুনাফা বাড়ায় বিনিয়োগকারীরা এবার গত বছরের চেয়ে ভাল ডিভিডেন্ড প্রত্যাশা করেছিল।

আর নেতিবাচক ডিভিডেন্ডের প্রভাব পড়েছে শেয়ারের দরে। মঙ্গলবার দিনশেষে কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিনিয়োগকারীরা।

বিনিয়োগকারীরা ক্ষোভের সাথে বলেন, কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের টাকা নিয়ে ব্যবসা করলেও বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারনা করেছে। কোম্পানিটির কাছ থেকে বিনিয়োগকারীরা আরো ভালেঅ ডিভিডেন্ড প্রত্যাশা করেছিল। কোম্পানির পরিচালকরা শেয়ার কারসাজি নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বিনিয়োগকারীদের দিকে দেখার সময় নেই।

একাধিক বিনিয়োগকারীরা বলেন, বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণের আশ্বাস দিয়ে ২০১৬ সালে তালিকাভুক্ত হয়েছে কোম্পানিটি। তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিটির মুনাফার পাহাড় গড়লেও নাম মাত্র ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। তাই হতাশ হয়ে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ দিয়েছে। এমন ডিভিডেন্ড ঘোষণা বাজার থেকে শেয়ার হাতিয়ে নেওয়ার অপকৌশল হতে পারে বলেও তারা মনে করেন। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন নজরধারী করা উচিত।

সুত্র মতে, আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের ব্যবসায় ডরিন পাওয়ার জেনারেশনস অ্যান্ড সিষ্টেমসের ১ হাজারেরও বেশি শতাংশ শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়েছে। তবে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ আগের বছরের ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে এবার ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে ডরিন পাওয়ারের পরিচালনা পর্ষদ ৬৪ পয়সার ইপিএসের বিপরীতে ৩০ শতাংশ (১০ শতাংশ নগদ ও ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ার) হিসেবে প্রতিটি শেয়ারে ৩ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল।

আর ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ব্যবসায় ৭.৫৭ টাকার ইপিএসের বিপরীতে ২০ শতাংশ (১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার) হিসেবে প্রতিটি শেয়ারে ২ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এ হিসাবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ইপিএস বেড়েছে ৬.৯৩ টাকা বা ১ হাজার ৮৩ শতাংশ। তবে প্রতিটি শেয়ারে লভ্যাংশ ঘোষণা কমেছে ১ টাকা বা ৩৩ শতাংশ।

এদিকে কোম্পানিটি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ইপিএস ৭.৫৭ টাকা হিসাবে মোট ৭২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা মুনাফা করেছে। এরমধ্যে লভ্যাংশ আকারে বোনাস শেয়ারবাবদ ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা ও নগদ লভ্যাংশবাবদ ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরন করা হবে। বাকি ৬০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বা ৮৩ শতাংশ রিজার্ভে যোগ হবে।

৯৬ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের ডরিন পাওয়ারে ১৪২ কোটি ৫২ লাখ টাকার রিজার্ভ রয়েছে। তবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মুনাফার মাত্র ১৭ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করায়, এ রিজার্ভের পরিমাণ আরও ৬০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বাড়বে।