দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে ডিভিডেন্ডের উপরে কয়েকবার টেক্স কাটা হয়। এটা খুবই খারাপ। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার বানিজ্য সংগঠন ও ব্যবসা বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আগারগাঁও এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এবং ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি দল উপস্থিত থেকে তাদেরর পক্ষ থেকে পুঁজিবাজার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে পরিচালক রকিবুর রহমান প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।

প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে নির্দিষ্ট ডিভিডেন্ড পলিসি থাকা উচিত। বর্তমান বাজারে স্টক (বোনাস শেয়ার) ডিভিডেন্ড দিয়ে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারনা করা হয়। স্টক ডিভিডেন্ড দেয়ার পর এক সময় উদ্যোক্তারা শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে যায়। এছাড়া ডিভিডেন্ডের ইনকামের উপর কয়েকবার টেক্স কাটা হয় তা বন্ধ করার আহবান জানান তিনি।

প্রস্তাবনায় তিনি আরও বলেন, বাজারে ভালো আইপিও নিয়ে আসতে হবে, সরকারী-বেসরকারী খাতের কোম্পানি এবং বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার ছাড়ার জন্য বাধ্য করতে হবে, যেসকল কোম্পানি সরকার থেকে অনুমোদন নিতে হয় (যেমন: পাওয়ার প্লান্ট প্রজেক্ট,এলপিজি প্রজেক্ট) অর্থাত লাভজনক প্রতিষ্ঠানের ২০ শতাংশ শেয়ার জনগনের জন্য ছেড়ে দিতে বাধ্য করতে হবে, সরকারের উন্নয়ন প্রজেক্ট (নতুন এয়ারপোর্ট, পুরাতন এয়ারপোর্ট সম্প্রসার, পাওয়ার প্রজেক্ট, এলপিজি টার্মিনাল) কোম্পানিতে রুপান্তরিত করে জনগনকে সম্পৃক্ত করার জন্য বাজারে তালিকাভুক্ত হতে হবে, এতে জবাব দিহিতা বাড়বে।

বাজারে কোম্পানি আনার জন্য ইনটেনসিভ দিতে হবে, একই সঙ্গে লিস্টেট কোম্পানির জন্য টেক্স কমাতে হবে, নন লিস্টেট কোম্পানির জন্য টেক্স বাড়াতে হবে। অডিট রিপোর্ট যাতে জবাবদিহি হয়, যেনতেন অডিট রিপোর্ট যাতে কোনো কোম্পানি দিতে না পারে সেজন্য ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল কে শক্তিশালি করা করা উচিত।

উদ্যোক্তাদের শেয়ার বিক্রির ব্যাপারে রেস্টিকশন দেয়া হউক, কোনো কোম্পানি সম্প্রসারনের জন্য ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে অর্থ নেয়া বন্ধ করতে হবে, স্বল্প মূলধনী কোম্পানি এবং জেড ক্যাটাগরির কোম্পানি মূল মার্কেটে রাখা যাবে না, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকে রিফার্নিশ করতে হবে। আর এসব কার্যক্রম বাস্তাবায়ন করতে পারলেই বাজারের উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ে এনইসি কনফারেন্স রুমে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, রাজস্ব ও ব্যাংকিং পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় সভা শেষে পুঁজিবাজার বিষয়ে সরকারের অবস্থান কি সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।

সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ফজলে কবির, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ড. আবুল হাশেম, পরিচালক রকিবুর রহমান ও মিনহাজ মান্নান ইমন, এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী, বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স কোম্পানীজ এসোসিয়েশনের সভাপতি মো: খলিলুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।