দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, বাজেটে রিজার্ভের উপর টেক্স ধারনের প্রস্তাব নিয়ে কোথাও ভুল হয়েছে। এছাড়া যে কনসেপ্টের উপরে উপস্থাপন করা হয়েছে, সেই কনসেপ্টটি সঠিক হয়নি।

যাতে রিজার্ভের উপর ট্যাক্সের প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) উদ্বিগ্ন। কমিশনও বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। তারা তাদের মতো করে বিষয়টি সমাধানের দাবি রাখবেন। বিষয়টি সমাধান হবে বলে আশা করছি।

উদ্যোক্তারাই কোম্পানি চালাবেন। তারাই শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ সংরক্ষন করবেন এবং লভ্যাংশ ঘোষণা করবেন। একইসঙ্গে কোম্পানির পুজিঁ গঠনের জন্য কাজ করবেন। তবে এই পুজিঁ গঠনের প্রক্রিয়া যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন সম্ভব না।

তাই রিজার্ভের উপর ট্যাক্সের যে বিষয়টি বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটি পূণঃবিবেচনার দাবি রাখে বলে মনে করি। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা সরকারের সর্বোচ্চ মহলে দাবি জানাবো।

রবিবার রাজধানীতে ডিএসইর কার্যালয়ে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ডিএসইর চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল হাশেম, পরিচালক রকিবুর রহমান, পরিচালক শরীফ আতিউর রহমান এবং পরিচালক মনোয়ারা হাকিম আলী উপস্থিত ছিলেন।

ইমন বলেন, আমরা চেয়েছিলাম রিজার্ভ প্রক্রিয়ার জন্য লভ্যাংশ যেনো ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। কোম্পানি লভ্যাংশও দেবে, রিজার্ভও গঠন করবে। কিন্তু কিছু কিছু কোম্পানি শুধু রিজার্ভই গঠন করেছে। ওইসব কোম্পানি লভ্যাংশ না দেওয়ার ফাকঁগোলে রিজার্ভ তৈরী করে শেয়ারহোল্ডারদেরকে ঠকিয়েছে। তার অর্থ এই নয় যে, একটি কোম্পানি পুরানো রিজার্ভের উপরে ট্যাক্স দেবে। তাই বাজেটে রিজার্ভের উপর ট্যাক্স সঠিক হয়েছে বলে মনে করি না।

ডিএসইর এই পরিচালক বলেন, বাজেটে আমাদের যেসব চাহিদা ছিল, তার অনেকগুলো পূরণ হয়েছে। এর বাহিরেও বাজারে যে বিষয়টি সামনে চলে এসেছিল, সেই বোনাস শেয়ারের বিষয়েও বাজেটে একটি প্রস্তাবনা এসেছে। কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত বোনাস শেয়ার নিয়ে আমরা অত্যান্ত উদ্বিগ্ন ছিলাম।

বাজারের দূরাবস্থা, তারল্য সংকটের কারন হিসাবে বোনাস শেয়ারকে চিহ্নিত করেছিলাম। এমতাবস্থায় সরকার কোম্পানিগুলোর নগদ লভ্যাংশ প্রদানের বিষয়টি অনুধাবন করেছে। সে কারনেই হয়তো নগদ লভ্যাংশে উৎসাহিত করার জন্য ও বোনাস শেয়ার কম দেওয়ার জন্য বাজেটে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টিকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি।

অনুষ্ঠানে ডিএসইর আরেক পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, নগদ লভ্যাংশ প্রদানে বাধ্য করার জন্য বাজেটে বোনাস শেয়ার ও রিজার্ভে ট্যাক্স প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী অনেক ভেবে চিন্তে এই প্রস্তাব করেছেন। তবে কোম্পানিগুলো নিয়মের মধ্যে আসলে এই প্রস্তাব ভবিষ্যতে পরিবর্তন করা যাবে। এক প্রশ্নে জবাবে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হাশেম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে ডিএসই একমত।

উল্লেখ্য, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, কোম্পানির অর্জিত মুনাফা থেকে শেয়ারহোল্ডারদেরকে বঞ্চিত করে সংরক্ষিত আয় হিসাবে রেখে দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। যা শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ধরনের প্রবণতা রোধে কোম্পানির কোনো আয় বছরে সংরক্ষিত আয়, রিজার্ভ ইত্যাদির সমষ্টি পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি হলে, অতিরিক্ত অংশের উপর সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে ১৫ শতাংশ কর প্রদান করতে হবে।