দেশ প্রতিক্ষণ, নারায়ণগঞ্জ: দেশের অন্যতম শিল্পসমৃদ্ধ ও বাণিজ্য নগরী নারায়ণগঞ্জ এখন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের হটস্পট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। দেশের অন্য ৬৩টি জেলায় নারায়ণগঞ্জ থেকে কোন লোক প্রবেশ করলেই তাকে নেয়া হচ্ছে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে।

নারায়ণগঞ্জ থেকেই সারা দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পরেছে, এমন অভিযোগের তীর ছোড়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন টিভি টক শো’তেও। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আর দ্রুত সংক্রমণের কারণে নারায়ণগঞ্জ এখন করোনার ‘হটস্পট’ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু কেন এই অবস্থা, সে বিশ্লেষণে বেরিয়ে এসেছে নানা কারণ।

নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিদের দাবী, এ জেলা থেকে ছড়ায়নি বরং এখানে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে অন্য জেলা থেকে আসা লোকজনের মাধ্যমে। নারায়ণগঞ্জে গুচ্ছ সংক্রমণের নেপথ্যে প্রধান কারণ দেশের অন্য জেলা থেকে আসা লাখ লাখ শ্রমিক ও কর্মজীবি। তারা বলছেন, নারায়ণগঞ্জের চেয়ে রাজধানী ঢাকার বর্তমান পরিস্থিতি আরও বেশি ভয়ঙ্কর।

এদিকে করোনাভাইরাসের অন্যতম প্রধান হটস্পট নারায়ণগঞ্জে অবস্থার ভয়ানক অবনতির আশংকা দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই জেলায় ১০৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। জেলায় একদিনে করোনা রোগী শনাক্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড এটি। এর আগে কখনো একশ’র বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়নি এখানে।

আজ মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জাতীয় রোগতত্ত্ব,রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে এ তথ্য গেছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৪৯ জনে। এখানে জেলা সিভিল সার্জনের এক কর্মকর্তার পরিবারের ১৮ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, ওই কর্মকর্থার শরীরে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়নি।

আইইডিসিআরের তথ্য মতে নারায়ণগঞ্জে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৩৯। এর আগে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটায় নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ওয়েবসাইটে ২৪ ঘণ্টার সর্বশেষ তথ্য জানানো হয়েছিল। এখানে নতুন করে ৮৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানানো হয়।

স্বাস্থ্য বিভাগের এই তথ্য নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৪২ জন। তবে সন্ধ্যায় আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে নারায়ণগঞ্জ জেলার আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে ৮৪৯ জনে উঠে যায়। এদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের চব্বিশ ঘণ্টার তথ্যে ৮৪ এবং আইইডিসিআরের ১০৭ মিলিয়ে গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যাটা উদ্বেগজনক। নারায়ণগঞ্জে বিপুল সংখ্যক তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার পর সংক্রমণের গতি বেড়ে যাওয়ার আশংকা প্রবল হয়ে উঠেছে।