দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের ভয়াবহ দরপতন হয়েছে। ২০২০ সালের পর এতো বড় দরপতন আর দেখা যায়নি। পুঁজিবাজারের এ দরপতনকে ‘অস্বাভাবিক’ বলছেন বিশ্লেষকরা। বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পুঁজি করে কোনো চক্র কম দামে শেয়ার কেনার জন্য এ দরপতন ঘটাচ্ছে। তারা বলছেন, ক’দিন ধরেই পুঁজিবাজার নেতিবাচক ধারায় ছিল।

এর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারে টানা বড় দরপতন দেখা যাচ্ছে। অথচ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। সুতরাং এ যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে এমন দরপতনের কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ও ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলছি, যুদ্ধের সঙ্গে আমাদের পুঁজিবাজারের কোনো যোগাযোগ নেই। অযথাই একশ্রেণির বিনিয়োগকারী আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন; আর সে কারণে বিক্রির চাপে বাজারে বড় পতন হচ্ছে।’

লালী মনে করেন, পুঁজিবাজারে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগসীমা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি যে নির্দেশনা দিয়েছে, সেটিরও প্রভাব থাকতে পারে এই পতনে। ‘বাজারে একটা সমস্যা হয়েছে, সেটা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, আট-দশ দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজার নিয়ে একটা গাইডলাইন দিয়েছে; সেই গাইডলাইন মানতে গিয়ে অনেক মার্চেন্ট ব্যাংক ও সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের বাজারে সাপোর্ট দেয়ার ক্ষমতা কমে গেছে।

‘বিএসইসির সঙ্গে কোনো ধরনের আলাপ না করেই এই নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দ্রুত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএসইসি বসে ওই গাইডলাইনের সংশোধনী আনা উচিত বলে আমি মনে করি।’ সোমবারের পতনে পুঁজিবাজার নেমে গেছে সাত মাসের আগের অবস্থানে। গত বছরের ২৯ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন সূচক এখন পুঁজিবাজারে।

সেদিন ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৪২৫ পয়েন্ট। তবে সে সময় বিনিয়োগকারীরা ছিলেন উৎফুল্ল। কারণ তখন বাজারে ছিল চাঙাভাব আর প্রায় প্রতিদিনই সূচক আগের অবস্থানকে ছাড়িয়ে ২০১০ সালের মহাধসের পর সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে যায়।