ঢাকা: সভা-সমাবেশ না করার বিষয়ে মতৈবিএনপিপন্থীদের মিছিলক্য হওয়ার পরদিন সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে মিছিল-সমাবেশ করেছে বিরোধী দল সমর্থক আইনজীবীরা।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও আইনজীবী সমিতির সভাপতি এজে মোহাম্মদ আলী বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সভা-সমাবেশ না করার ব্যাপারে কোনো সমঝোতা হয়নি।

এর পরপরই সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে মিছিল-সমাবেশ করেন বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামী সমর্থক আইনজীবীরা।আইনজীবী সমিতি ভবন থেকে বেরিয়ে মিছিলটি সুপ্রিম কোর্টের মূল ফটক ঘুরে আবার সমিতি ভবনে এসে শেষ হয়।

সেখানে সমাবেশে মিলিত হন তারা।সমাবেশে আইনজীবী মির্জা আল মাহমুদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের কারাগারে রেখে, নির্বাচিত সম্পাদককে কারাগারে রেখে, সুপ্রিম কোর্টে হামলাকারীদের বিচারের বাইরে রেখে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কোনো সমঝোতা হতে পারে না।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, “বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো প্রকার চুক্তি বা সমঝোতা হয় নাই। আইনজীবীরা গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় সামিল আছে, থাকবে। আন্দোলনের কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না আসা পর্যীন্ত তা অব্যাহত থাকবে।”তিনি বলেন, “ওই দিনের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, আলোচ্য বিষয়বস্তু আলোচকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

কিন্তু দুঃখের বিষয় আলোচনার পরপরই আওয়ামীপন্থী হিসাবে পরিচিত আইনজীবীসহ মাননীয় অ্যাটর্নি জেনারেল আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সম্পর্কে এক বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রকাশ করেন।”দুই দিন সংঘাতের পর মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠকে আদালত চত্বরে সভা-সমাবেশ না করার বিষয়ে একমত হন সরকার ও বিরোধী দল সমর্থক আইনজীবীরা।

ওই বৈঠকের পর সমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার একেএম শামসুল ইসলাম মঙ্গলবার বলেন, বৈঠকে সুপ্রিম কোর্টের দুই দিনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য উপস্থিত আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তারা সুপ্রিম কোর্টে সভা-সমাবেশ না করার বিষয়ে একমত হন।

“আদালত অঙ্গনে মিছিল সমাবেশ না করা নিয়ে হাই কোর্টের একটি রায়ও রয়েছে। সেই রায়ের আলোকে সীমানার মধ্যে কোনো মিছিল সমাবেশ করা যায় না।”বৈঠকে উপস্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সেক্রেটারি ও সমিতির সাবেক সম্পাদক মো. বদরুদোজ্জা বাদলও সমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তবে সমঝোতার কথা অস্বীকার করে এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, “প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সুপ্রিম কোর্টে আক্রমণের বিষয়ে নির্লিপ্ত থাকায় আমি অত্র আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করি।

কারণ পুলিশের সহায়তায় সন্ত্রাসীদের আক্রমণে শুধু আমি নই, অসংখ্য আইনজীবীর নিহত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।”আগামী ৫ জানুয়ারির ভোট রুখতে রোববার বিরোধীদলের ঢাকা অভিযাত্রা পরবর্তী সমাবেশে যোগ দিতে সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি মিছিল বের করার চেষ্টা করেন বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা।

এ সময় ফটকের বাইরে থেকে জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।এরপরেও বিরোধী দল সমর্থকরা বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে থাকলে এক পর্যায়ে তাদের ধাওয়া দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ফটক খুলে আদালত চত্বরে ঢুকে পড়ে সরকার সমর্থকরা।

তাদের হামলায় বিরোধী দল সমর্থক তিন আইনজীবী আহত হন। পরদিনও সুপ্রিম কোর্টের ফটকে বিক্ষোভরত বিরোধী দলের আইনজীবীদের সঙ্গে যুব মহিলা লীগ কর্মীদের ঢিল ছোড়াছুড়ি হয়।