আইন-আদালতস্টাফ করেসপন্ডেন্ট,ঢাকা:  মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন আল্লাহর পরে প্রধানমন্ত্রী, তার পরেই ট্রাইব্যুনালের অবস্থান।

মঙ্গলবার জামায়াত নেতা একেএম ইউসুফের মামলায় বাগেরহাট নোটারী পাবলিকের দুই আইনজীবী ট্রাইব্যুনালে হাজির না হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

দেশ যেভাবে এগিয়ে যাওয়ার সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে মর্মে মন্তব্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছেন প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম।

পূর্বনির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী মঙ্গলবার দুই আইনজীবী আব্দুল ওয়াদুদ ও শামীমা আক্তার হরতাল ও অবরোধের কারনে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পারেননি বলে তাদের পক্ষে আইনজীবী গাজী এইচ তামিম সময় বাড়ানো আবেদন জানান।

এ সময় ট্রাইব্যুনাল আরো বলেন, “আদালতে আইনজীবীরা আসছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে মামলার সাক্ষীরাও আসছেন। ওনারা কেন আসতে পারেননি? পরবর্তী দিনে তারা না আসতে পারলে তাদের যেখানে যাওয়ার সেখানেই যেতে হবে।”

এ সময় আইনজীবী তামিম বলেন, “ওনারা চেষ্টা করেও আসতে পারেননি।”

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এ সময় বলেন, “তারা চেষ্টা করেননি। আমরা চেষ্টা করিয়ে দিলেই তারা আসবেন।”

ট্রাইব্যুনাল বলেন, “আমরা যদি ভুল করে কোনো আদেশ দিই তাহলে কিন্তু ওই আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাবে না।”

আসামিপক্ষের আইনজীবী গাজী তামিমকে উদ্দেশ্য করে ট্রাইব্যুনাল বলেন, “আপনাকে তো কোনো বোমা, আগুন, হামলা, জামায়াত-শিবির ও আওয়ামী লীগ কিছুই পায় না। আপনি তো ট্রাইব্যুনালে আসতে পারেন।” আপনার সিনিয়র আইনজীবী আসতে পারেনি কেন জানতে চায় ট্রাইব্যুনাল।

এ সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, “আল্লাহর পরে প্রধানমন্ত্রী, তারপরে ট্রাইব্যুনাল।”

আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১২ জানুয়ারি বাগেরহাটের ওই দুই আইনজীবীকে ট্রাইব্যুনালে হারিজের নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।

জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির এ কে এম ইউসুফের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সপ্তম সাক্ষী আসিয়া খাতুনের নামে ২০১০ সালে একটি অ্যাফিডেভিট করা হয়। বাগেরহাট নোটারি পাবলিকের ওই দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ ও অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার ওই অ্যাফিডেভিট করান।

ওই সময় ইউসুফের আইনজীবী ট্রাইব্যুনালকে জানান, ওই অ্যাফিডেভিটে সাক্ষী আসিয়া বলেন, একাত্তরে এ কে এম ইউসুফ মানবতাবিরোধী কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। কিন্তু সাক্ষী আসিয়া ট্রাইব্যুনালে তার জবানবন্দিতে দাবি করেন, এমন কোনো অ্যাফিডেভিট তিনি করেননি।

এ কারণে ট্রাইব্যুনাল-২ নোটারি পাবলিকের এই দুই আইনজীবীকে আদালতে হাজির হয়ে এ ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা দিতে আদেশ দেন।

গত ১৫ ডিসেম্বর অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ আদালতে উপস্থিত হন। কিন্তু অপর আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার না আসায় তার উপস্থিত নিশ্চিত করতে বাগেরহাটের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এর পর গত ১৯ ডিসেম্বর শামীমা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়েছিলেন।