শেল কোম্পানির বিরুদ্ধে নারীদের অর্ধনগ্ন প্রতিবাদ
ঢাকা: নাইজেরিয়া বিশ্বের তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশটির তেল উৎপাদনের জন্য নিজস্ব প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা না থাকায় বিদেশী তেল উত্তোলন কোম্পানির কাছে স্বাভাবিকভাবেই দ্বারস্থ হতে হয়।
আর এই তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেল অন্যতম। সম্প্রতি, নাইজেরিয়ার বেইসলা রাজ্যের পেরিমাবিরি গোষ্ঠির নারীরা অর্ধনগ্ন অবস্থায় এই তেল কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
নাইজেরিয়ার সরকারের সঙ্গে শেল কোম্পানির করা এক চুক্তির বিরুদ্ধে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়। বেইসলা রাজ্যের একটি নির্দিষ্ট অংশের তেলক্ষেত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রন করে শেল কোম্পানি।
প্রতিবাদরত নারীরা অঞ্চলটির প্রধান তেলক্ষেত্রটির প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দিয়ে অর্ধবিবস্ত্র হয়ে প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদকারীদের দাবি, ‘শেল কোম্পানি দুই বছর আগে এই সম্প্রদায়ের মানুষদের কমিউনিটি জেনারেটর প্রতিস্থাপনের, স্কুল নির্মান এবং সুপেয় পানির যে নিশ্চয়তা দিয়েছিল তা রক্ষা করেনি।’
প্রতিবাদকারীদের মধ্যে কিছু নারীর হাতে ‘শেল: আমাদের আলো দাও’, ‘আমাদের পানি, আলো, স্কুল এবং শিশুদের জন্য শিক্ষা চাই’ ইত্যাদি বক্তব্য সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ছিল।
এদিকে শেল মুখপাত্র অকলোবো জানান, ‘ পেরিমাবিরি’তে নতুন জেনারেটর দেয়ার জন্য শেল পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি একটি জেনারেটর আনার ব্যবস্থা করছে। এখানে জেনারেটরটি এসে পৌছলেই স্থাপন করা হবে।’
উল্লেখ্য, নাইজেরিয়ার পঁয়ত্রিশটি গ্রামের অধিবাসীরা তেল কোম্পানি ‘শেল’-এর বিরুদ্ধে এর আগে লন্ডনের একটি আদালতে মামলা করেছিল। গ্রামগুলোর পার্শ্ববর্তী নদীতে নির্গত তেল পরিশোধনে কোম্পানিটির যে দায়িত্ব ছিল, তা পালনে মন্থর গতির কারণে ওই গ্রামের জনমানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছিল বলে মামলায় দাবি করা হয়। গ্রামবাসীদের দাবি ছিল যে, তারা খাবার পানি ও কৃষিকাজের জন্য নদীটির ওপর নির্ভর করে।
নদী পরিশোধনের কাজটি যথার্থভাবে না করায় গ্রামবাসীদের যে সীমাহীন দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে, সেজন্য ‘শেল’ দায়ী। ২০০৮ সালে ওই নদীতে দুই দুইটি তেল বিস্ফোরণের প্রেক্ষিতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। শেল এর প্রতিনিধি দাবি করেছিলেন যে, ২০০৯ সালে সফলভাবে ‘শেল’ ওই নদী পরিশোধন করেছিল এবং পরে চুরি ও স্থানীয়দের অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের কারণেই নদীতে দূষণ অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে, গ্রামবাসীদের দাবি, অপর্যাপ্ত পরিশোধন প্রক্রিয়াই অব্যাহত দূষণের জন্য দায়ী। কতটুকু তেল ওই নদীতে বিস্ফোরিত হয়েছে তার যথার্থ হিসেব করে ওই পরিশোধন কাজ পরিচালিত হয়নি। স্থানীয় অধিবাসীদের মতে, ৬০০,০০০ ব্যারেল তেল সেখানে নির্গত হয়েছিল।