সিডনিতে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা
সিডনি: অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিসহ বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ।
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সিডনির ব্ল্যাকটাউন কেন্দ্রে অস্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়। শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি হাতের লেখা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন সাইদা হায়দার ও মুনিরা বাসার এবং বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন প্রকৌশলী ফজলে কাদের। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পরিচালনা করেন অনিন্দিতা আহমেদ এবং হাতের লেখা প্রতিযোগিতার সমন্বয় করেন মাসরেকা সারোয়ার, শরিফা শারমিন ও তানিয়া চৌধুরী। এসময় মাতৃভাষার ওপর নিজের লেখা পড়ে শোনান ইমরান সারোয়ার।
আলোচনা পর্বে বাংলা লিখতে পড়তে ও বলতে পারার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন একাডেমির স্কুল শাখার অধ্যক্ষ সাইদা হায়দার ও অভিভাবক প্রতিনিধি ড. মাসরেকা সারোয়ার।
এদিকে, মহান ভাষা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরতে তিন দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান শুরু হয় ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে।
তিনদিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয় ‘আমার ভাষা আমার স্বাধীনতা’ শীর্ষক সেমিনার। সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সিডনির স্বনামধন্য রেডিও ‘টুএসইআর’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্তিভ আহার্ন। প্রধান অতিথি ছিলেন নিউ সাউথ ওয়েলস রাজের প্রিমিয়ারের বিশেষ প্রতিনিধি ও পারামাটার সংসদ সদস্য ড. জেফ লি এমপি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন বাংলা একাডেমির একাডেমির পরিচালক আনোয়ার আকাশ।
সেমিনারে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে অস্ট্রেলিয়ার আদিভাষাগুলো বিলুপ্ত হবার আশঙ্কা প্রকাশ করেন ও বাংলা একাডেমির এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
দ্বিতীয় দিন, ২০ ফেব্রুয়ারি ছিলো শহীদ মিনার নির্মাণ বিষয়ক কর্মশালা। কর্মশালাটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থপতি অনিন্দিতা আহমেদ ও পরিচালক আনোয়ার আকাশ।
এসময় তারা ১৯৫২ সালে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণের ইতিহাস তুলে ধরেন। এছাড়াও শহীদ মিনার নির্মাণের ওপর একটি তথ্যমূলক ভিডিও চিত্র দেখানো হয়। অনুষ্ঠানটি সমন্বয় করেন এপিং কেন্দ্রের তানিয়া চৌধুরী।
এছাড়াও ভাষার মাস উপলক্ষে বই মেলার আয়োজন করা হয়। বই মেলায় পাওয়া গেছে বাংলা একাডেমি, অবসর, অনন্যা, অঙ্কুর, অন্নেশা, অন্যপ্রকাশ, বাংলা প্রকাশ, বিদ্যাপ্রকাশ, সাহিত্য প্রকাশ, চন্দ্রাবতী, চারুলিপি, দিব্যপ্রকাশ, ইত্যাদি, গতিধারা, কথামেলা, ন্যাশনাল, রোদেলা, সাহিত্য প্রকাশ, শুদ্ধস্বর, সময়, স্টুডেন্ট ওয়েজ, তাম্রলিপি, চন্দ্রাবতী সহ অন্যান্য প্রকাশকের বই।
অনুষ্ঠানে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিলো এসবিএস।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ফেডারেশন অব কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুলের নির্বাহী সংগঠক মাইকেল ক্রিস্তোদুলু, হাঙ্গেরিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ড. বেলা কার্ডওস, মোহাম্মাদ আলরুবাই, চিকিৎসক ও ভাষাবিদ ড. টেরেন্স মার্ক হলাহান প্রমুখ।
বক্তব্য রাখেন ভিয়েতনামী ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুল শিক্ষক টেমি ট্রেন, থাইউয়ান দাও, নামতুয়ান ট্রেন, মেডিটেরেনিয়ান ভাষা শিক্ষক, টার্কিশ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রতিনিধি কারা আলী, দারি ল্যাঙ্গুয়েজ প্রতিনিধি হসেঞ্জাদা, এরাবিক স্কুলের আদিদ আলরুবাই, টারেক জিলাউত, ড. হাসান সারোয়ারসহ আরও অনেকে।