181624DSE_logoএইচ কে জনি : ধীরে ধীরে হারানো রুপে ফিরছে দেশের পুঁজিবাজার। ২০১০ সালের ধস পরবর্তী সময় থেকে টানা দর পতনে প্রায় সব শ্রেনীর বিনিয়োগকারীরাই বাজারের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় যেন বিনিয়োগকারীদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে। ফলে বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রায় সব শ্রেনীর বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। পিছিয়ে নেই বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের মার্চ মাসে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্যানুযায়ী, মার্চ মাসে এর আগের মাস ফেব্রুয়ারির তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ৪৫৯ কোটি ৩১ লাখ টাকার বা ৭৩ শতাংশ আর্থিক লেনদেন বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে ডিএসইতে বিদেশী ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা ১ হাজার ৯২ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন করেছেন। যার পরিমাণ ফেব্রুয়ারি মাসে ছিল ৬৩২ কোটি ৮৯ লাখ টাকার। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৭৩ শতাংশ।

এদিকে মার্চ মাসে বিক্রয়ের চেয়ে ৩৩০ কোটি টাকার ক্রয়ের পরিমাণ বেশি হয়েছে। এ সময় বিদেশী ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা ৭১১ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট ক্রয় এবং ৩৮১ কোটি ১০ লাখ টাকার বিক্রয় করেছেন।

অন্যদিকে ফেব্রুয়ারি মাসেও বিক্রয়ের চেয়ে ২৩৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকার ক্রয়ের পরিমাণ বেশি ছিল। এ সময় বিদেশী ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা ৪৩৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট ক্রয় এবং ১৯৭ কোটি ২২ লাখ টাকার বিক্রয় করেছিলেন। যা বাজারের জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীলতা থাকায় অনেক বিনিয়োগকারীর মধ্যে ধীরে ধীরে আস্থার সঞ্চার হচ্ছে। ধারাবাহিক উত্থানের কারণে দেশের শেয়ারবাজার অনেকটাই বিনিয়োগ উপযোগী হয়ে উঠেছে। যার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিদেশিরাও বিনিয়োগে সক্রিয় হচ্ছেন। এখন এ স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সরকার তথা নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে নজর রাখতে হবে যাতে করে বিনিয়োগকারীরা যেন এ বাজারে বিনিয়োগ করে কোনোভাবে আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

তারা আরও বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার আভাস মিলছে। ব্যাংকের বিনিয়োগের সীমা সমন্বয় বিষয়ে জটিলতা কেটে যাওয়ার পাশাপাশি সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মহলের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে দেশের চাইতে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বেশি পুঁজিবাজারে সক্রিয় হয়েছেন। বিশেষ করে বিদেশী বা প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিওতে শেয়ার কেনার পরিমাণ বেড়েছে । তারা মনে করছেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে সব ধরণের সূচক এখন ইতিবাচক। একইসঙ্গে পুঁজিবাজারের সব সূচকও ইতিবাচক অবস্থানে। দেশের প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ও সুদের হারসহ সার্বিক পরিস্থিতি দেখে বিদেশিরা মার্কেটে এগিয়ে আসছে। তাতে বিনিয়োগ বাড়ছে।

তবে এতে খুব বেশি খুশি না হয়ে ভবিষ্যতে আরও বেশি সতর্কও থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা। কারন হিসেবে তারা বলেন, টাকার বিপরীতে ডলারের শক্তিশালী অবস্থান এবং শেয়ারের দর নেমে যাওয়ায় মুনাফার আশায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে ঝুঁকছেন। কিন্তু তারা কোনো কারণে চলে গেলে তা বাজারকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে।