দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে দীর্ঘ দিন ধরে চলছে টানা দরপতন। চরম ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে পুঁজিবাজারে। প্রতিদিন ক্রেতাশূন্য অবস্থায় পড়ে থাকছে অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান। এতে ঘটছে টানা দরপতন। সেই সঙ্গে চলছে লেনদেন খরা। পুঁজিবাজারের এমন করুণ দশা দেখে রাস্তার নেমে প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা। আর বাজারে লেনদেন কমতে কমতে ঠেকেছে তলানিতে।

ফলে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই ডিএসইর সূচকের বড় দরপতন হয়েছে। সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বাজার মূলধন সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার উধাও হয়ে গেছে। বড় অঙ্কের বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি সূচকেরও বড় পতন হয়েছে। তবে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৮৫ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠান। আর দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে সাড়ে ১৫ শতাংশের বেশি। গত সপ্তাহের লেনদেন শুরু হওয়ার আগে ডিএসই’র বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৬ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। ধারাবাহিকভাবে কমে সপ্তাহ শেষে সেই বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা।

অর্থাৎ পতনের মধ্যে পড়ে ডিএসই’র বাজার মূলধন কমেছে ৬ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া মাত্র ৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩২৭টির। আর ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া ৮৫ দশমিক ১৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।

এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স কমেছে ১৬৮ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৭৭ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। অর্থাৎ ঈদের পর লেনদেন হওয়া দুই সপ্তাহে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৩৪৫ দশমিক ৬১ পয়েন্ট।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ১০ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ।

আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪৭ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ২৯ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচটি কমে ৩৫ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

সবকটি মূল্যসূচক কমলেও লেনদেনের গতি কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৫২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৭৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বা ১৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ।