bsec-dse lagoদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: চীনের শেনচেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত অংশীদার করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। ডিএসইর একজন কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বিএসইসিতে ওই আবেদন জমা দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, “অনুমোদন পেলেই ডিএসইর ওই শেয়ার শেনচেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জকে বিক্রি করা হবে।” এর আগে সোমবার কৌশলগত অংশীদার করতে চীনের শেনচেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাবেই চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ।

সেদিন জানানো হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের জন্য ডিএসইর প্রস্তাব ‘শিগগিরই’ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে পাঠানো হবে ।

চীনের প্রধান তিনটি স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে সাংহাই ও শেনচেন রয়েছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে। বাজার মূলধনের দিক থেকে বিশ্বের সেরা ১০টি স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাতেও রয়েছে এক্সচেঞ্জ দুটি।

সাংহাই স্টক একচেঞ্জের বাজার মূলধন সাড়ে তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। শেনচেন স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন দুই দশমিক দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন ৫১ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

কৌশলগত অংশীদার পেতে তিন মাস আগে ডিএসই আহ্বানে দুটি কনসোর্টিয়াম দরপত্র জমা দেয়। এদের মধ্যে চীনের দুই এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম ছাড়া অপর দরদাতা ছিল ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, ফ্রন্ট্রিয়ার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাক-এর কনসোর্টিয়াম।

দুটি প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে ১০ ফেব্রুয়ারি চীনের কনসোর্টিয়ামকে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসই। ওই সিদ্ধান্তের পর গত সপ্তাহে বাজারে নানা ধরনের গুঞ্জন শুরু হয়; যার প্রভাবে সূচক পড়তে থাকে। চীনা কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাব গ্রহণ করার যে সিদ্ধান্ত ডিএসই নিয়েছে, তা আবারও যাচাই-বাছাই করতে বিএসইসি নির্দেশ দিয়েছে বলেও গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

ওই খবরের প্রেক্ষিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “দর প্রস্তাব মূল্যায়নে প্রায় অর্ধেক পিছিয়ে থাকা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের তদবির ও চাপ প্রয়োগ যেমন নজিরবিহীন ও আইনবিরুদ্ধ, বিএসইসি কর্তৃক তাতে প্রভাবিত হয়ে বাছাই প্রক্রিয়াকে কলুষিত করে অযোগ্য প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে ইন্ধন যোগানো তেমনই বেআইনি ও অগ্রহণযোগ্য।”

এরপর বিএসইসির এক বিবৃতিতে বলা হয়, সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই না করে এ ধরনের চূড়ান্ত মন্তব্য টিআইবির গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, চীনা কনসোর্টিয়াম ৯৯০ কোটি টাকায় ডিএসইর ৪৫ কোটি বা ২৫ শতাংশ শেয়ার (প্রতিটি ২২ টাকা দরে) কিনবে। সেই সঙ্গে ডিএসইর কারিগরি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ৩৭ মিলিয়ন ডলার খরচ করবে।

অন্যদিকে, এনএসইর নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম প্রতিটি শেয়ার ১৫ টাকা করে ২৫ দশমিক এক শতাংশ শেয়ার কেনার প্রস্তাব দিয়েছিল। পাশাপাশি তারা কারিগরি সহযোগিতার কথা বললেও কত টাকা ব্যয় করবে তার উল্লেখ ছিল না সেখানে।

কৌশলগত অংশীদার পেলে বাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারী ও কোম্পানির তালিকাভুক্তি বাড়বে, এবং এর ইতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়বে বলে ডিএসই পরিচালনা পর্ষদ আশা করছে।