পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির হিড়িক!
ফাতিমা জাহান, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারীর পর মার্চ মাসে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির প্রবণতা থেমে ছিলো। তারা একটু বাজারমুখী হয়েছিলেন। কিন্তু এপ্রিলে আবারও বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনা কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাব নিয়ে ডিএসই ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার টানাপোড়েন সহ বেশ কিছু ইস্যুকে কেন্দ্র করে এপ্রিল মাসজুড়ে দরপতন অব্যাহত ছিলো। এ কারণে বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছাড়তে শুরু করেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, এ সমস্যার কারণে পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল রয়েছে। তবে স¤প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চীনা দুই পুঁজিবাজার শেনঝেন ও সাংহাইকে ডিএসইর অংশীদারিত্বের জন্য মনোনিত করেছে। আগামী ১৪ মে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর মালিকানায় আসতে চুক্তি করবে। ফলে এখন পুঁজিবাজারের এই সমস্যা সমাধান হবে। এতে বাজারও ভালো হবে বলে মনে করেন ডিএসইর সাবেক পরিচালক শরীফ আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, দেশি বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটা ভয় কাজ করেছে। এখন সেই ভয় কেটেছে, আশা করছি বাজার ভালো হবে। বাজার ভালো হলে বিদেশিরাও শেয়ার কিনতে শুরু করবেন।
ডিএসই’র তথ্য মতে, এপ্রিল মাসে বিদেশি-প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা ৫২৭ কোটি ৭১ লাখ ৮৭ হাজার ৬০২ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন। অথচ মার্চ মাসে তারা শেয়ার বিক্রি করেছিলেন মাত্র ২৯৯ কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার ৩০৭ টাকার। টাকার অংকে মার্চের তুলনায় এপ্রিলে শেয়ার বিক্রি বেড়েছে ১২৩ কোটি ৪৫ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৫ টাকা। আর শতাংশের হিসেবে ৭৬ শতাংশ বেশি।
অলোচিত এই মাসে প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনাবেচা বাবদ লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩০ কোটি ৭৪ লাখ ৫১ হাজার ৩৪৪ টাকা। এর মধ্যে শেয়ার বিক্রি বাবদ লেনদেন হয়েছে ৫২৭ কোটি ৭১ লাখ ৮৭ হাজার ৬০২ টাকা। আর শেয়ার কিনেছেন ৫০৩ কোটি ২ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪২ টাকা। যা আগের মাসের চেয়ে কমেছে ২৪ কোটি ৬৯ লাখ ২৩ হাজার ৮৬০ টাকা।
এর আগের মাস মার্চে বিদেশিদের মোট লেনদেন হয়েছিলো ৭৫৫ কোটি ২৩ লাখ ৩৩ হাজার ২১০ টাকা। এর মধ্যে শেয়ার কেনা বাবদ ৪৫৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮২ হাজার ৯০৩ টাকা। তার বিপরীতে বিক্রি মাত্র ২৯৯ কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার ৩০৭ টাকার। ফেব্রয়ারিতে বিদেশিরা ডিএসইতে লেনদেন করেছিলেন ৮৮০ কোটি ৭০ লাখ ৮১ হাজার ৫৫৭ টাকার।
এর মধ্যে শেয়ার কিনেছিলেন ৩৯২ কোটি ৯৯ লাখ ২ হাজার ৩৭৩ টাকা। তার বিপরীতে শেয়ার কিনেছিলেন ৪৮৭ কোটি ৭১ লাখ ৭৯ হাজার ১৮৫ টাকা।