দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিশ্বজুড়ে পুঁজিবাজার চাঙা হয়েছে। তবে উল্টা পথে হাটছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। দীর্ঘ তিন মাস ধরে ধাবাহিক দরপতন হলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা কার্যকর কোন ভুমিকা নিতে পারছেন না। বরং হুটহাট সিদ্ধান্তে নি:স্ব হতে চলছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারীরা। পরিস্থিতি এমন যে শেয়ার বাজাওে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা পাপ করছে। তবে গত বুধবার গোটা বিশ্বে প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোর আয় বেড়েছে।

ফলে বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাজারে প্রাণ সঞ্চার ঘটেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। কিন্তু দেশের পুঁজিবাজার এখন লাইফ সাপোর্টে চলছে। কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। গত মঙ্গলবার বাজার নিয়ন্ত্রক বা অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসি পতন ঠেকাতে তিন ক্ষণস্থায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

কিন্তু পরের দিন দেখা গেল পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন। এ দরপতনের পেছনে বিনিয়োগকারীরা নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রাত আস্থা ও তারল্য সংকটের কথা বলছেন। এর প্রেক্ষিতে গত বুধবার শেয়ার দাম কমার নতুন সীমা বেঁধে দিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এতে আজ বৃহস্পতিবার পতন প্রবণতা আরও গভীরতর হয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ে কারসাজিকারীরা যে বেশি শক্তিশালী ও বেপরোয়া, তা আজ আবারও প্রমাণিত হলো। বাজারের তথাকথিত অংশীজনেরাই পতনের মূল হোতা, সেটা আজ আবারও প্রমাণিত হলো। কারণ শেয়ার দর বেঁধে দেওয়ার বিরুদ্ধে বরাবরই তাদের অবস্থান। এছাড়া, তারা চায় বর্তমান কমিশন যেন শেষ বেলায় এসে অশান্তি ও অস্থিরতার মধ্যে থাকে।

এতে বিশ্ব নতুন মডেল আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা। এই খবরে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কোম্পানিটির শেয়ার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির অন্যান্য টেক জায়ান্টেরও আয় বেড়েছে। এশিয়ায় প্রযুক্তি খাতের শেয়ারদর ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। ইউরোপের মার্কেটেও একই চিত্র দেখা গেছে। যার সার্বিক প্রভাব পড়েছে সারা বিশ্বের পুঁজিবাজারে। এই প্রেক্ষাপটে আলোচ্য কার্যদিবসে ইউরোপের ব্রড স্টোকস ৬০০ সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। ওয়াফার মেকার এএসএম ইন্টারন্যাশনালের শেয়ার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ শতাংশ।

ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রোচের শেয়ার দরও ঊর্ধ্বগামী হয়েছে। একই দিনে নাসডাকের শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে শূন্য দশমিক ৬৫ শতাংশ। তবে বিলাস দ্রব্য তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান কেরিংয়ের শেয়ারের দরপতন ঘটেছে। ২০১৭ সালের পর যা সর্বনিম্ন। লোমবার্ড ওডিয়েরের প্রধান অর্থনীতিবিদ

স্যামি ছার বলেন, চলতি সপ্তাহে সারা বিশ্বে শেয়ারবাজারে আয় ঊর্ধ্বগামী হয়েছে। কারণ, এসময়ে ভূ-রাজনৈতিক সংকট কিছুটা হলেও এড়িয়ে যাওয়া গেছে। গত দুই সপ্তাহে স্টোক মার্কেটে যা নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল।

গত শুক্রবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ২৩১৭ ডলার। সেই এখন পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয় ধাতুটির দর কমেছে ৪ শতাংশেরও বেশি। এসময়ে প্রযুক্তি জায়ান্ট মেটা প্লাটফর্ম, অ্যালফাবেট (গুগল) এবং মাইক্রোসফটের বাজারে সুবাতাস লেগেছে। সেগুলোরও আয় বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।