দেশ প্রতিক্ষণ, বরিশাল: বরিশালের মুলাদী উপজেলায় জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে ওই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার ফল জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইসিডিআর) থেকে বরিশালে আসে।

বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান এ তথ্য দেশ প্রতিক্ষণকে নিশ্চিত করেন । এ নিয়ে বরিশাল বিভাগের তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। এ ছাড়া বিভাগে আরও ৬জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক। এ নিয়ে বরিশাল বিভাগে মোট আক্রান্ত হলেন ২৩ জন।

জানা গেছে- মুলাদী উপজেলার ওই ব্যক্তি ১২ এপ্রিল বিকেল সাড়ে চারটায় মারা যান। তাঁর বয়স ছিল ৪৮ বছর। ৬ এপ্রিল তাঁর ছোট ভাই ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি আসেন। পরে তাঁর সর্দি, কাশি ও জ্বর দেখা দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, মারা যাওয়া ব্যক্তি ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন। তাঁদের বাবা–মা ও বোনেরও উপসর্গ রয়েছে।

ওই ব্যক্তির মারা যাওয়ার খবর পেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা গিয়ে তাঁর মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআরে পাঠান। গতকাল রাতে পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে। বুধবার সকালে ওই ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। উপসর্গ রয়েছে পরিবারের বাকি সদস্যদের নমুনা আজ বিকেলে সংগ্রহ করা হবে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার থেকে এ পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে নতুন আক্রান্ত ছয়জনসহ মোট ২৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও একজন ব্যাংক কর্মচারী রয়েছেন। নতুন আক্রান্ত ছয়জনের মধ্যে দুজনের বাড়ি বরিশাল, তিনজনের বাড়ি পিরোজপুর এবং একজনের বাড়ি বরগুনায়। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া বাকি দুজনের একজন পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার, অপরজন বরগুনার আমতলী উপেজলার।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৩ জন নারায়ণঞ্জ ও সাভারের পোশাক কারাখানার শ্রমিক। তিনজন ঢাকা ভ্রমণ করেছিলেন। বাকিরা আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন নারী।

৯ এপ্রিল বরিশাল বিভাগে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত এক সপ্তাহে ২৩ জন আক্রান্ত হন। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় ৯ জন, বরগুনায় ৪ জন, ঝালকাঠি জেলায় ৩ জন, পিরোজপুরে ৫ জন এবং পটুয়াখালী জেলায় ২ জন শনাক্ত হন।