দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) থেকে তালিকাচ্যুত হয়েছে, বর্তমানে কোনো প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত নেই এমন কোম্পানিগুলোর তালিকা চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে কি কারণে কোম্পানিগুলোকে তালিকাচ্যুত করা হয়েছে এবং তালিকাচ্যুতির সময় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল তাও জানতে চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সম্প্রতি ডিএসই ও সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ নামে একজন ক্ষুদ্র ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। চিঠিতে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে বিএসইসি জানিয়েছে, গত ২৭ অক্টোবর রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ নামে একজন ক্ষুদ্র ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারী ‘ওটিসি মার্কেট বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত এবং এক্সিট পরিকল্পনায় বাদ পড়া এক্সচেঞ্জ কর্তৃক তালিকাভুক্ত ডি-লিস্টেড কোম্পানিগুলোর বিষয় বিবেচনা ও সিদ্ধান্ত করা প্রসঙ্গে’ চিঠি পাঠিয়েছে।

এরই ধরাবাহিকতায় স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে কোনো প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত নয় এমন সব ডি-লিস্টেড কোম্পানির তালিকা, ওই কোম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডিং, পৃষ্ঠপোষক বা পরিচালকদের তালিকা, আর্থিক অবস্থান এবং অন্যান্য তথ্য, কোম্পানিগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ, কোম্পানিগুলোরর বর্তমান অবস্থা, ডি-লিস্ট করার কারণ এবং ডি-লিস্টিংয়ের সময় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল তা জানাতে বলা হলো।

এদিকে ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো চিঠিতে বিনিয়োগকারী রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ইতিমধ্যে ডিএসই তার লিস্টিং নিয়ম অনুযায়ী যেসব কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়েছে তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে ডি-লিস্টেট করা হয়েছে। এর ফলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী হিসাবে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, কিন্তু আমাদের কর্তৃপক্ষ যাদের অনুমোদন সাপেক্ষে কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে আইপিও ছাড়ার অনুমতি পেয়েছে, তাহাদের কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে ন। যার ফলশ্রুতিতে কোম্পানিগুলো অনিয়ম করতে উৎসাহিত হয়ে পরছে এবং সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের অবহেলা করে ডি-লিস্টেড অব্যহত রেখে এর সুফল ভোগ করছে।

ফলে আমার মতো সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ হারাচ্ছে। চিঠিতে তিনি অরো উল্লেখ করেন, এই ব্যাপারে আইসিবি মার্কেট মেকারের দায়িত্ব থাকা স্বত্ত্বেও নিরব ভূমিকা পালন করেছে। যদিও আইসিবি’র নিজস্ব পোর্টফোলিতে ওই কোম্পানিগুলোর প্রচুর পরিমান ডি-লিস্টেড শেয়ার রয়েছে। এমতাবস্থায় বর্তমানে ১৬টি তালিকাচ্যুত কোম্পানি রয়েছে, যারা বর্তমান বিএসইসি’র এক্সিট পরিকল্পনা থেকে বাদ পরেছে। ওই কোম্পানিগুলোর বিষয়ে কোনো পরিকল্পনার আওতায় আনা হয় নাই।

কোম্পানিগুলো হলো: এবি বিস্কুটস কোম্পানি, বাংলাদেশ অ্যারোমা টি, বেঙ্গল স্টিল ওয়ার্কস, ঢাকা ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ, ইস্টল্যান্ড ক্যামেলিয়া, ফ্রগলেগ এক্সপোর্ট, হাওলাদার পিভিসি পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজ, ইসলাম জুট মিলস, করিম পাইপ মিলস, মিলন ট্যানারিজ, নিউ ঢাকা রিফ্রেকটরিজ (বিডি), প্রগ্রেসিভ প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ, পেপার কনভার্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, এসটিএম, সোয়ান টেক্সটাইল মিলস ও টেক্সপিক ইন্ডাস্ট্রিজ। তাই ওই কোম্পানিগুলোর ব্যাপারে ডিএসই কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এক্সিট পরিচালনায় সহায়তা করে আমাদের মতো হাজারো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারিদের পুঁজি সুরক্ষা করতে সক্ষম হবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসই’র প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা (সিওও) এম সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘আমরা তালিকাচ্যুত কোম্পানির বিষয়ে বিএসইসি’র চিঠি পেয়েছি। এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা চিঠির জবাব দিব।’

এদিকে সিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘শিগগিরই বিএসইসি’র চিঠির জবাব দেওয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদেরলিস্টিং বিভাগ কাজ করছে।’