দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের টালমাতাল পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা। বর্তমান বাজারের আচরন মেনে নিতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। কারণ হঠাৎ লেনদেনের উস্ফল্লণ, নয় হঠাৎ সূচকের উস্ফল্লণ ঘটছে। বাজারের এমন টালমাতাল পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ নিয়ে দু:চিন্তায় বিনিয়োগকারীরা। কারণ দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) গত চার কাযদিবস আগে এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হতে দেখা গেছে।

এরপর থেকেই লেনদেনের পাশাপাশি সূচকের পতন অব্যাহত রয়েছে। এর আগে সূচক ও লেনদেনে রেকর্ড উত্থানের পর গত এক বছরই পুঁজিবাজার নিম্নমূখী ছিলো। এবারও রেকর্ড লেনদেনের পরে টানা বাজারে পতন অব্যাহত রয়েছে। ফলে টানা দরপতন কি পুরানো অভ্যাসে পরিনত হয় কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা।

একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলছেন, এক বছর আগে ডিএসইতে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার লেনদেন হতে দেখা গেছে। এরপর টানা একবছরই বাজার পরিস্থিতি খারাপ ছিলো। এবারও কি বাজার সেই পুরানো পথে হাঁটছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত এক বছরের নিন্মমুখী বাজারে কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর। সেই কম দরের শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগ করেছে সুযোগ সন্ধানী বিনিয়োগকারীরা। এরপর থেকে বাজার কিছুটা ভালো হতে শুরু করে। এতে করে সূচকের উত্থান হয়েছে ৬০০ পয়েন্টর মতো।

এরপরই এক বছর পর ডিএসইতে রেকর্ড লেনদেন হতে দেখা গেছে। সেই লেনেদেনর দিনে সুযোগ সন্ধানী বিনিয়োগকারীরা নিজেদের শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে মুনাফা তুলেছে। এতে করে কমেছে বাজারের তারল্য। যার কারণে বাজারে কমতে শুরু করেছে লেনদেন ও সূচক। তাহলে কি এক বছর আগের মতো রেকর্ড লেনদেনের পরে আবারও বাজার সূচকের বড় পতন হবে এমন প্রশ্নই তুলছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। আর এই আতঙ্ক ছড়িয়ে আছে প্রতিটি ব্রোকারেজ হাউজে। তারা বলছে রেকর্ড লেনদেনের পরে এমন ক্রমাগত সুচক ও লেনদেনের পতন কিসের ইঙ্গিত।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হয় মুনাফার জন্য। দীর্ঘ দিন বাজার খারাপ থাকায় কম ধরে অনেকেই শেয়ার কিনেছেন। আর এখন সেই শেয়ারগুলো মুনাফায় থাকায়, সেই মুনাফা বিনিয়োগকারীরা গ্রহণ করছেন। এতে করে বাজারে কিছুটা নিন্মমূখী। তবে যদি বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে আবারও বিনিয়োগ করে তবে বাজার আবারও ঘুড়ে দাঁড়াবে।

জানা গেছে, আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪.১৯ পয়েন্ট বা ০.০৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৫১০ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ০.৩৪ বা ১.৯৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪২০.৬৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১.৯৬ পয়েন্ট বা ০.০৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে দুই হাজার ৩৩১.৮৮ পয়েন্টে। ডিএসইতে আজ এক হাজার ৩০০ কোটি ১৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৫১০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৮১০ কোটি ৫২ লাখ টাকার।

ডিএসইতে আজ ৩৭১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৬১টির বা ১৬.৪৪ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ১৩৭টির বা ৩৬.৯৩ শতাংশের এবং ১৭৩টির বা ৪৬.৬৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১.২৫ পয়েন্ট বা ০.০০৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ১৮১.৭৬ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ২৪১ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৩ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১০৬ টির আর ৯২ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১১৫ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।