বিপ্লবের ঘোষণা নিয়ে কারও কোনো দ্বিমত নেই: নাসীরুদ্দীন
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে কারও কোনো দ্বিমত নেই। হয়তো শাব্দিক চয়নে কিছু পার্থক্য রয়েছে। এগুলো অলরেডি আমরা সমাধান করতে পেরেছি। আমরা ড্রাফটিং করে ফেলেছি। যে কেনো সময় আমরা অথবা সরকার যদি ঘোষণা করে, আমরা তা প্রকাশ করব।’
শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী। সংবাদ সম্মেলনে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের বিষয়ে মানুষের প্রত্যাশা জানতে ৬ থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে যৌথভাবে জনসংযোগ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে নাসীরুদ্দিন বলেন, আন্দোলনের পর ছাত্র-জনতার একটি সরকার গঠন হয়েছিল। সরকারেরই ঘোষণার উদ্যোগ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন কাজে আমরা মন্থর গতি দেখতে পাচ্ছি। যখন ২৪ সাল অতিক্রান্ত হচ্ছিল, আমরা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি, তাদের একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে, সে জন্য তাদের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। জুলাইয়ে একটি ঐক্যের জায়গা রয়েছে, সে জায়গায় জনগণকে সমুন্নত রাখতেই এই উদ্যোগ নিই আমরা।
তিনি আরও বলেন, তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পক্ষগোষ্ঠীর ও বাংলাদেশের মানুষের সেখানে আসার কথা ছিল, আমার তাদের সেখানে পাইনি। যখন জাতির একটা সংকটকাল যাচ্ছিল এবং শহীদ ও আহতের স্বীকৃতি নিয়ে কোনো ঘোষণা আসছিল না, সেই সংকট মুহূর্তে আমরা এই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছি।
রাজনতিক নেতা ও দলগুলোর সঙ্গে যখন বসা শুরু হয়, তাদের পক্ষ থেকে দ্বিতম ছিল, ভিন্নমত ছিল। সে ক্ষেত্রে তাদের পক্ষ থেকে ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা বা অসহযোগিতা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা বলেন, প্রোক্লেমেশন বা ঘোষণাপত্র নিয়ে সবার ঐকমত্য রয়েছে।
রাষ্ট্রের যতগুলো অংশ এবং দেশের সব পক্ষ ও মানুষের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। তবে দৃষ্টিভঙ্গিগত জায়গা বা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো কীভাবে তুলে আনা যায়, সে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে একটু দেরি হয়েছে। ঘোষণাপত্র শেষ পর্যায়ে জানিয়ে তিনি বলেন, গত ৫৩ বছর এই রাষ্ট্রকে অকার্যকর বানিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম সব মানুষ ও পক্ষ যাতে অংশ নিয়ে তাদের ভাষাটা প্রকাশ করতে পারে।
৫ তারিখে (আগস্ট) আমরা যে জনতার স্রোত দেখতে পেয়েছিলাম, প্রত্যেক মানুষের কথা যেন এই প্রোক্লেমেশনে থাকে এবং যাদের দীর্ঘকালীন ন্যায্য অধিকার রয়েছে, যা নিয়ে সবাই লড়াই করছেন, প্রতিটা অধিকার যেন থাকে, সেসব বিষয় নিয়ে আমরা সবার সঙ্গে কথা বলেছি। ঘোষণাপত্র প্রণয়নে সব রাজনৈতিক দলের ইতিবাচক সাড়া ও সহযোগিতা রয়েছে বলে জানান তিনি। দৃষ্টিভঙ্গিগত কিছু পার্থক্য থাকলেও সবার মতামতের ভিত্তিতেই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের কাজ চলছে বলেও জানানো হয়।
নাসীরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, প্রোক্লেমেশন বা ঘোষণাপত্র নিয়ে কারও কোনো দ্বিমত নেই। হয়তো শাব্দিক চয়নে কিছু পার্থক্য রয়েছে। এগুলো অলরেডি আমরা সমাধান করতে পেরেছি। আমরা ড্রাফটিং করে ফেলেছি। যে কেনো সময় আমরা অথবা সরকার যদি ঘোষণা করে, আমরা তা প্রকাশ করব।