দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সংস্কার খায় না মাথায় দেয়, শুধু বলেন সংস্কার? দেশ সংস্কার করেছে জিয়াউর রহমান, জিয়াউর রহমান বাড়ি বাড়ি গেছে, খালেদা জিয়া মাইলের পর মাইল কাজ করেছে। তাই দেশ সংস্কার একমাত্র বেশি করেছে বিএনপি। যুবকদের জন্য যুব মন্ত্রণালয় করেছে বিএনপি, মহিলাদের জন্য মহিলা মন্ত্রণালয় করেছে বিএনপি, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় করেছে বিএনপি। সবগুলো কল্যাণকর কাজ করেছে বিএনপি। দেশে প্রথম সংস্কারের ঘোষণা দেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া।

৩১ দফার মধ্যে সংস্কার রয়েছে। বিএনপি জোর করে ক্ষমতায় যায় না, শোনা যাচ্ছে ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন দিতে পারে। তাহলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের কোনো নেতা-কর্মী যদি কাউকে অত্যাচার ও নিপীড়ন করে, তাহলে আপনারা জানাবেন আমি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আজ রোববার বিকালে টাঙ্গাইলের পৌর উদ্যানে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টুর গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরও বলেন, ১৭ বছর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে, অসংখ্য খুন করেছে, গুম করেছে। জুলাই আন্দোলনে আমাদের ৪ শতের অধিক কর্মীকে হতয়া করা হয়েছে। আমরা বিএনপি ১ দফা আন্দোলন শুরু করেছি। আমরা স্বৈরাচার পতন করেছি।

সংবর্ধিত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, শেখ হাসিনা সরকার আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলে, কী রকম ভয়াবহ নির্যাতন করেছে যারা আপনারা দেখেন নাই তারা বুঝবেন না। কী ভয়াবহ নির্যাতন আমাদের ওপর করেছে। আমি এমপি ছিলাম, মন্ত্রী ছিলাম। তারপরেও আমার ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। এমন করে আঘাত করতো যে ড্রিল মেশিন দিয়ে পায়ের হাঁটু ছিদ্র করে দিতে। আমাদেরকে কনডেম সেলে নিয়ে নির্যাতন করা হতো। একটি কথা বলতে চাই, অত্যাচারীদেরকে কখনো আল্লাহ ক্ষমা করেননি, শেখ হাসিনাকেও ক্ষমা করবে না।

তিনি বলেন, টাঙ্গাইলে যত হিন্দুদের বাড়ি ছিলে, সব আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দখল করেছে। ইদানিং ভারতের মিডিয়া আমাকে নিয়ে মিথ্যা অপ্যপচার চালাচ্ছে, তাই বলতে চাই আমি কখনো হিন্দুদের ক্ষতি করিনাই। তাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে লাভ নাই। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছিলে এই দেশে। কিন্তু জাতীয়তাবাদী দল কখনো সন্ত্রাসীতে বিশ্বাস করে না। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর বলেছিলাম, বাংলাদেশে এই গণঅভ্যুত্থানের পর মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছিলাম।

কিন্তু ভেবেছিলাম আর রাজপথে নামতে হবে না। কিন্তু বড় দুঃখের বিষয় এই সরকারও সেই পথেই হাঁটছে। বিগত দিনে বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মী গুম হয়েছে, খুন হয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর পর ভেবেছিলাম আমরা যে অধিকারের জন্য এ গণঅভ্যুত্থানে অংশ হয়েছিলাম, সেই আশা-আকাঙ্ক্ষা শেষ হয়েছে। খুনি হাসিনা যেমন বলতেন আগে উন্নয়ন পরে নির্বাচন। ঠিক তেমনি এই সরকার বলে বেড়ায় আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। সারাদেশে এখন ডাকাতি হচ্ছে, বাসে ডাকাতি হচ্ছে, ট্রেনে ডাকাতি হচ্ছে, আগেই বলেছি দেশে শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে অবশ্যই নির্বাচন দরকার।

জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে টুকু বলেন, বিগত ৯৬ সালের নির্বাচনে ৩ সিট পেয়েছিলেন, এবার আসেন নির্বাচনে, একটি সিটও পাবেন না। আপনারা গায়ে ইসলামী লেবাস লাগিয়ে সন্ত্রাসী করবেন তা বাংলাদেশের জনগণ মানবে না। জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহিনের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) বেনজির আহমেদ টিটো, সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাঈদ সোহরাব,

নির্বাহী সদস্য এস এম ওবায়দুল হক নাসির, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল। উল্লেখ্য, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আব্দুস সালাম পিন্টুকে ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। এরপর গত ৫ আগস্ট সরকার পতন হলে একুশে গ্রেনেড হামলা মামলায় খালাস পায় আব্দুস সালাম পিন্টু।