নির্বাচন নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: মির্জা ফখরুল
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (১২ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে এসে বৈঠক করার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলিনি। একটি নির্দিষ্ট সময় লাগবেই তাদের নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে। আমরা সে সময় দিয়েছি।’
সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে যমুনায় আসেন বিএনপির নেতারা। মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাউদ্দিন আহমেদ, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান।
বিকাল পাঁচটার দিকে বৈঠক থেকে বেরিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমরা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছি। মূলত, গণতন্ত্র হত্যাকারী, গণবিরোধী যে ফ্যাসিস্ট সরকার, যারা দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর ধরে এই দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে মানুষকে তার অধিকার বঞ্চিত করে, গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে একটি ফ্যাসিস্ট রুল কায়েম করেছিল।’
‘ছাত্র, জনগণের আন্দোলনে, রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনের ফলে আজকে একটি মুক্ত পরিবেশে এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই প্রথম তারা আজকে আমাদের সঙ্গে বসেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কী কী করা যায়, সে বিষয়ে মতামত দিয়েছি। তারা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন—কী করতে যাচ্ছেন। এখন মনে করি, সরকারকে সহায়তা করা প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষের একমাত্র কর্তব্য।’
‘আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে যারা বাংলাদেশের মানুষের অধিকার হরণ করে নিয়েছিল, তারা আবার বাইরে থেকে, বিদেশ থেকে, এখান থেকে পালিয়ে গিয়ে—ভারতে অবস্থান নিয়ে সেখান থেকে বাংলাদেশে যে বিজয় অর্জন হয়েছে জনগণের, সেই বিজয়কে নস্যাৎ করার জন্য আবার চক্রান্ত শুরু করেছে’, দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
বৈঠকের বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমরা একটা কথা খুব স্পষ্ট করে বলেছি, তথাকথিত মাইনরিটির ওপর অত্যাচার নির্যাতনের যে গল্প ফাঁদা হয়েছে, সে গল্পটা পুরোপুরি উদ্দেশ্যমূলক। বাংলাদেশকে ম্যালাইন করা, এই সরকারকে ম্যালাইন করা, ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে একেবারে নস্যাৎ করে দেবার আরেকটি চক্রান্ত।’
‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক, এত হত্যা, এত নির্যাতন, এত শিশুকে হত্যা করার পরও সেই দলটি আবারও বিভিন্ন রকম কথা বলছে—যা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে। আমরা মনে করি, সরকারের এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার’, বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি সরকার অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলবে। অবশ্যই কোনও হত্যাকারীর সঙ্গে নয়, কিন্তু যারা ছাত্রকে হত্যা করেছে, যারা শিশুকে হত্যা করেছে, যারা রাজনৈতিক নেতাদের হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে জনগণ আছে এবং এই ব্যাপারে সরকার ব্যবস্থা নিতে গেলে অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে।’
বিএনপির পর জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আজই বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের থাকা ‘নিষেধাজ্ঞা’ এখনও বহাল আছে কিনা, তা জানা যায়নি। এরপর এবি পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ), সিপিবি-বাসদ, গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।