দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি ইউনিয়ন ব্যাংকের ২৬২ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মুলত যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে এস আলমের নিয়োগ দেওয়ার ফলে চাকরিচ্যুত করা হয়। ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ইউনিয়ন ব্যাংক দীর্ঘদিন এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। গত আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকার পতনের পর ব্যাংকটিকে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করেছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়ন ব্যাংক এস আলম মুক্ত করার আগেই ব্যাংকটির বেশির ভাগ অর্থ নামে-বেনামে সরিয়ে নিয়েছে গ্রুপটি। এর ফলে ব্যাংকটি এখন তারল্যসংকটে ভুগছে। গত ১৭ নভেম্বর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় খরচ কমাতে ২৬২ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত হয়। চাকরিচ্যুত ব্যক্তিদের সবাই গত ফেব্রুয়ারিতে নিয়োগ পেয়েছেন। এই নিয়োগ দিতে ব্যাংকটি কারও কোনো পরীক্ষা নেয়নি বলে জানা গেছে। চাকরিচ্যুত ব্যক্তির সবাই ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার ও ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশ অফিসার পদের কর্মকর্তা। তাদের অধিকাংশই চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ আগস্ট ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর নতুন স্বতন্ত্র পর্ষদ দায়িত্ব নিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিদর্শন করে জানায়, ব্যাংকটির ঋণের ১৮ হাজার কোটি টাকা বা ৬৪ শতাংশই নিয়েছে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক পরিদর্শনে দেখা যায়, ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী এস আলমের ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের একজন। তার সময়ই ব্যাংকটি থেকে বিপুল অর্থ বের করে নেয় এস আলম গ্রুপ।

ব্যাংকের তারল্য পরিস্থিতি খারাপ হয়ে পড়লে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে নিজের হিসাবে থাকা পুরো টাকা তুলে নেন এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরীও। গত ৮ অক্টোবরের পর তিনি আর ব্যাংকে যাননি, পদত্যাগপত্রও জমা দেননি। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।