sheikh hasinaযশোর ব্যুরো, দেশ প্রতিক্ষণ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট বিদেশীদের কাছে দেশের সম্পদ গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছিল। ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি ও লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছিল। রোববার বিকেলে যশোর ঈদগাহ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় তিনি একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশে অবৈধ ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। এদেশে এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল কেউ মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে পারতো না। ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। শুরু হয়েছিল হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি।

তিনি বলেন, ২১ বছর বাংলাদেশের জনগণ দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করেছে। এমনকি প্রতিরাতে কারফিউ দেয়া হতো। জিয়াউর রহমান এদেশে কারফিউ দিয়ে দেশ চালাতেন। তার গণতন্ত্র ছিল যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতির সুযোগ করে দেয়া, যাদেরকে জাতির পিতা সাজা দিয়েছিলেন। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর বিচার হয়েছিল, যাদের হাত লাখে শহীদের রক্তে রঞ্জিত ছিল, তাদেরকে মন্ত্রী বানানো, পতাকা তুলে দেয়া এবং রাজনীতির সুযোগ দেয়া ছিল জিয়াউর রহমানে বহুদলীয় গণতন্ত্র। এদের কাজ ছিল লুটপাট করা, সম্পদের মালিক হওয়া। এভাবে বাংলাদেশ ২১ বছর হারিয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করেছিল। শিক্ষার মান এবং স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করেছি। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন হয়েছিল। মানুষের জীবনে স্বস্তি ফিরেছিল।

তিনি দাবি করেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশের সম্পদ গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছিল। এরপর দুর্নীতি ও লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছিল। জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাই সৃষ্টি হয়েছিল। একই দিনে পাঁচশ’ স্থানে বোমা হামলা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের দুশাসনে ও জরুরি অবস্থায় আরও ৭/৮ বছর এদেশের মানুষের জীবন থেকে চলে যায়।

তিনি বলেন, জাতির পিতা সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। স্বাধীনতার ৪৬ বছরের ২৯ বছর চলেছে দুঃশাসন। কেবল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয়। আজকে যশোরের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড উদ্বোধন করেছি।

এসময় শেখ হাসিনা বলেন, এগুলো আপনাদের জন্য উপহার হিসেবে দিয়ে গেলাম। এছাড়াও আরও দেড় ডজন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করছি। এই কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন হবে। আমরা যেখানে উন্নয়ন করি, সেখানে বিএনপি জামায়াত জোট মানুষ হত্যা করে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন আর অবহেলার পাত্র নয়। বিশ্বের অনেকেই এখন বাংলাদেশকে সমীহ করে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য প্রমুখ। জনসভা সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার।