দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজার বিষয়ক নিউজ পোর্টাল শেয়ারনিউজের নির্বাহী সম্পাদক হাসান কবির জনি’র দাদী রওশন আরা বেগম (৭৫) না ফেরার দেশে চলে গেছেন (ইন্না নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল ৪ জুলাই রাত ৮ টায় বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ইন্তেকাল করেন। গতকাল এইচ কে জনি’র করা এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ তথ্যই জানিয়েছেন। পাঠকদের জন্য তার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

“ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজীউন। আমাকে একা করে চলে গেলেন মমতাময়ী দাদু। যিনি ছিলেন আমার সকল সুখ দুঃখের শেষ আশ্রয়স্থল। আমার হাজারো অন্যায় যার কাছে ছিল সামান্য খুনশুটি।
দাদা-দাদুতো সব নাতিদেরই আদর করে থাকেন, তবুও মনে হয় আমিই পৃথিবীর সবচাইতে সৌভাগ্যবান নাতি। গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আমার মতো আদর দাদা-দাদুর কাছ থেকে কম নাতি-নাতনিই পেয়েছে।

২০১২ সালে দাদাকে হারিয়েছি। এরপর থেকেই যত সুখ দুঃখ আছে সব দাদুর সাথেই ভাগ হতো। কিন্তু আজ তিনিও আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন। যে হাত আমাকে সারাজীবন আগলে রেখেছিল, সেই হাতটি এখন কাফনের কাপড় জড়িয়ে বাড়ির ওঠোনে পড়ে আছে। সকাল ৯টার পর রেখে আসবো অন্ধকার ঘরে। আজ দাদু আমার হাতটি শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন, পরে আমি দাদুর ডান হাতটি আমার গালে রেখে বলেছিলাম, তোমার আদরের নাতি তোমার সামনেই আছি, একটু আদর করো না। কিন্তু দাদু অনেক চেষ্টা করেও ওনার বাম হাতটি আমার গালে আনতে পারে নি। শুধু ওনার চোখ দিয়ে অশ্রুই গড়িয়েছে।

আজ সারাদিন চোখের সামনে থেকে একটু একটু করে চলে যেতেই দেখেছি। একটু পরপরই পালস আর অক্সিজেন স্যাচুরেশন দেখছিলাম আর আল্লাহর কাছে কষ্ট ছাড়া বিদায়ের প্রার্থনা করছিলাম। চোখের সামনে ওনার চলে যাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করার ক্ষমতা আমার নাই। তবুও মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া যে দাদু ইমানের সহিত জিকির এবং কালেমার সাথেই কষ্টবিহীন মৃত্যুর স্বাধ গ্রহণ করেছেন।
আপনারা সবাই আমার দাদুর জন্য দোয়া করবেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন দাদুকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করেন। আগামীকাল রোববার সকাল ৯টায় দাদুর জানাজা খানেবাড়ি শাহী জামে মসজিদ ইদগাহ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। আশেপাশে থাকা প্রত্যেককে জানাযায় শরীক হয়ে ওনার রুহের মাগফেরাত কামনা করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।”

খোজ নিয়ে জানা গেছে, রওশন আরা বেগম দাউদকান্দি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ভূইয়া পরিবারের বিশিষ্ট সমাজসেবক ও দানবীর আলহাজ্ব মরহুম ছিদ্দিকুর রহমান ভূইয়ার সহধর্মিণী ছিলেন। এছাড়াও বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক ও বিটেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবির ভূইয়া মরহুমার বড় ছেলে। ওনার মৃত্যু সংবাদে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

জানা যায়, তিনি খুবই বিনয়ী ও স্বল্পভাষী হিসেবে তাঁর একটা আলাদা গ্রহনযোগ্যতা ছিল সর্বত্র। মৃত্যুকালে তিনি এক মেয়ে ও তিন ছেলে রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে গ্রামবাসী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
মুঠোফোনে আলাপকালে এইচ কে জনি জানান, ‘আজ সকাল ৯টায় দাদুর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন দাদুকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করেন, সেজন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমার চাচীর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।আমরা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’ এইচ কে জনি’র দাদীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ পরিবার বর্গ।