পুঁজিবাজারে অতিরিক্ত বিনিয়োগের জন্য এনআরবিসি ব্যাংককে জরিমানা
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে অতিরিক্ত বিনিয়োগের কারণে এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংককে সাড়ে ২৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মুলত আইনে বেধে দেওয়ার সীমার থেকে পুঁজিবাজারে বেশি বিনিয়োগ করার জন্য এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক জরিমানা করা হয়েছে। রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকটিকে জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক এককভাবে তার মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান আরও ২৫ শতাংশ অর্থাৎ সম্মিলিতভাবে মূলধনের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু গত জুলাই মাস শেষে শেয়ারবাজারে এককভাবে এনআরবিসি ব্যাংকের বিনিয়োগ মোট মূলধনের ২৭.২৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। আর এই অতিরিক্ত বিনিয়োগের কারণেই ব্যাংকটিকে জরিমানা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আইনেই বলা আছে একটি ব্যাংক তার মূলধনের কত শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে। আইনি সীমার বেশি বিনিয়োগ করেছে এনআরবিসি। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের কাছে অতিরিক্ত বিনিয়োগের কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছে। কিন্তু ব্যাংকটির পক্ষ থেকে সন্তোষজনক জবাব না দেওয়ায় জরিমানা করা হয়েছে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শেয়ারবাজারের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে বেশ রিটার্নও পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে অতিরিক্ত রিটার্নের আশায় ব্যাংকটি সীমার বাইরে গিয়ে বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু ব্যাংকটির দেওয়া প্রতিবেদনে লোকচুরির আলামত পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে তার সত্যতা পাওয়া যাওয়া ব্যাংকটিকে জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়া, আরও কয়েকটি ব্যাংককে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যদি কোনো ব্যাংক সীমার বাইরে গিয়ে বিনিয়োগ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেয়ারবাজারে এনআরবিসি ব্যাংক ২০২১ সালে তালিকাভুক্ত হয়েছে। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর কোম্পানিটির শেয়ার সর্বোচ্চ ৪০.৪০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।
এ বিষয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল বলেছেন, বিনিয়োগকৃত সিকিউরিটিজের দর বাড়ার কারনে বিনিয়োগ ২৫% এর বেশি হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ ২০% এর মধ্যে। ব্যাংকের বিনিয়োগ গণনা করা হয় বাজার দরের উপর। যাতে শেয়ারবাজার ভালো করলে বিনিয়োগ বেড়ে যায়। কিন্তু সেটা সমন্বয় করতে গেলে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
উল্লেখ্য, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক শেয়ারবাজার ১২০ কোটি টাকা উত্তোলনের জন্য ১২ কোটি শেয়ার ইস্যু করে। এক্ষেত্রে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ টাকা। সরকারি সিকিউরিটিজ ক্রয়, সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করার জন্য এই অর্থ উত্তোলন করা হয়।
এজন্য গত বছরের ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭৪৯তম সভায় ব্যাংকটির আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়। এরপরে ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোম্পানিটির আইপিওতে আবেদন গ্রহণ করা হয়। আর শেয়ারটির লেনদেন শুরু হয় ২২ মার্চ।