দেশ প্রতিক্ষণ, চুয়াডাঙ্গা: ভিক্ষুক পুনর্বাসনের জন্য দেওয়া টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া দুস্থ রোগীদের জন্য সরকার থেকে দেওয়া ওষুধও আত্মসাৎ করেছেন তিনি। একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে, গত অর্থবছরে আলমডাঙ্গায় ভিক্ষুকদের মধ্যে সুদমুক্ত ঋণ হিসেবে বিতরণের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সমাজসেবা অধিদপ্তর। কিন্তু কোনো টাকাই বিতরণ করেননি সমাজসেবা অফিসার নাজমুল হোসেন।

সর্বশেষ গত ১৫ জুলাই আলমডাঙ্গা উপজেলা সমাজসেবা অফিসের উচ্চমানসহকারী মো. মনিরুজ্জামান উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থ ও ওষুধ আত্মসাতের অভিযোগ করেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, সমাজসেবা অফিসার নাজমুল হোসেন গত অর্থবছরে ভিক্ষুক পুনর্বাসনের জন্য পাওয়া বরাদ্দের ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়ে সন্ধ্যা রানী নামে একজনকে একটি গাভি কিনে দিয়েছেন। বাকি এক লাখ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন।

এ ছাড়া কয়েক মাস আগে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমডাঙ্গা সফর করেন। ওই সময় অফিসে খরচের নামে উপজেলা সমাজসেবা অফিসের কর্মচারীদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে চাঁদা তোলেন সমাজসেবা অফিসার নাজমুল হোসেন। সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালকও আলমডাঙ্গা পরিদর্শনে গেলে তার আপ্যায়নের জন্য কর্মচারীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে কাটা হয়েছে।

পাশাপাশি উপজেলার প্রতিটি বেসরকারি এতিমখানার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে যে বরাদ্দ সেখান থেকে ৪ শতাংশ কেটে নেওয়া হয় চাঁদা হিসাবে। এতিমখানা ও বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক নিরীক্ষা অনুমোদনের নামেও ৫ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, উপজেলার রোগী কল্যাণ সমিতির অর্থ ব্যয়ের কোনো স্বচ্ছতা নেই। রোগী কল্যাণ সমিতির ওষুধ সরবরাহকারীর দোকান থেকে নাজমুল হোসেন নিজের ও পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ নেন। তবে বিল পরিশোধ করা হয় রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে।

আলমডাঙ্গা উপজেলা সমাজসেবা অফিসের জন্য সরকারিভাবে সরবরাহ করা ল্যাপটপ নাজমুল হোসেন ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে অকেজো করে ফেলেছেন। অভিযোগের বিষয়ে আলমডাঙ্গা সমাজসেবা অফিসার মো. নাজমুল হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা। তদন্তে আমি দোষী হলে শাস্তি হবে।

কর্মকর্তাদের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে সমাজকল্যাণ সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক সমাজসেবা অফিসার মো. নাজমুল হোসেনকে বদলি করেছি। তার বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেছি। তদন্ত হচ্ছে, তদন্ত প্রতিবেদনে যা উঠে আসবে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।

অন্যদিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা সমাজকল্যাণ সংগঠক মো. জিয়াবুল হোসেনের বিরুদ্ধে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়ন কর্মসূচির বয়স্ক ও বিশেষভাতার টাকা বিতরণ না করার অভিযোগ উঠেছে। তিনি হতদরিদ্র মানুষের জন্য সরকারি বরাদ্দের অর্থ বিতরণ না করে কালক্ষেপণ করছেন। সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি এই মুহূর্তে মনে আসছে না। তবে যে অন্যায় করুক তাকে শাস্তি পেতেই হবে। কোনো ছাড় নেই।