দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ‘ভালোবাসা রঙ’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় মাহিয়া মাহির। ২০১২ সালে সিনেমাটি মুক্তির পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একে একে ভালোবাসার রঙ, পোড়ামন, অনেক সাধের ময়না, ঢাকা অ্যাটাক, জান্নাত, অগ্নি, দেশা দ্য লিডার, যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত রোমিও বনাম জুলিয়েটসহ অসংখ্য সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। ক্যারিয়ার শুরু পর খুব অল্প সময়েই সফল নায়িকার তকমা জুড়ে তার নামের পাশে।

যদিও একটা সময়ে চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার আবিষ্কার মাহির সংস্থাটির সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। একপর্যায়ে জাজ ছেড়ে দেন তিনি। তার ঠিক পরপরই ২০১৬ সালের ২৫ মে সিলেটের ছেলে ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুকে বিয়ে করেন মাহি। পাঁচ বছরের মাথায় সেই সংসার ভেঙে যায়।

যদিও বিচ্ছেদের আগে থেকেই আলাদা থাকছিলেন তারা। বিচ্ছেদের আগে ঢাকাই সিনেমার এক চিত্রনায়কের সঙ্গে মাহির প্রেমের গুঞ্জন ওঠে। যদিও বিষয়টি নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। অপুর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরও সিনেমা চালিয়ে গেছেন মাহি। সিনেমা প্রতি নিতেন ১০ লাখ টাকা। এই সময়ের দেশীয় সিনেমায় তিনিই সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেওয়া তারকা। সব কিছু ঠিক ঠাক চলছিল। এর মধ্যে ফের প্রেমে পড়েন মাহি। ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান সরকার রকিবকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে রয়েছে পুত্রসন্তান ফারিশ।

গাজীপুরের ছেলে রকিবকে বিয়ের পরই মাহির মাথায় রাজনীতির ভূত চেপে বসে। জানা যায়, স্বামীই নাকি মাহিকে রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। রকিবের উৎসাহে রাজনীতির মাঠে সরব হন মাহি, জুটে যায় বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদও। এরপর এমপি হওয়ার মিশনে নামেন ঢালিউডের এই নায়িকা। গত বছরের শুরু দিকে নিজ এলাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন তোলেন। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি।

তখন থেকেই একালায় নানা সামাজিক কার্যক্রমে যুক্ত হতে দেখা যায় তাকে। সঙ্গে সব সময়ই দেখা যেত স্বামীকে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে রাজশাহী-১ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের ফরম তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু মনোনয়ন না পেয়ে রাজশাহী-১ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্য জোটে মাত্র ৯ হাজার ৯ ভোট। বিপুল ভোটে পরাজয়ের পরও রাজনীতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন মাহি।

এদিকে শোনা যাচ্ছে, নায়িকার রাজনৈতিকভাবে সাফল্য না পাওয়াই সংসার ভাঙার অন্যতম কারণ। স্বামী নাকি চাইতেন মাহি রাজনীতিতে সরব থাকুক। কিন্তু মনোনয়ন না পাওয়া ও ভোটের মাঠে পরাজয়ের পর দুজনের মাঝে দূরত্ব বাড়তে থাকে। ফিল্মে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও স্বামীর পরামর্শে কাজ কমিয়ে দেন মাহি। মন দেন রাজনীতিতে।

গত শুক্রবার ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন মাহি। একদিকে সিনেমা থেকে দূরে সরে গেলেন। রাজনীতিতে হলেন ব্যর্থ। টিকল না সংসারও! কেউ কেউ বলছেন, রাজনীতিতে নেমে সব কূলই হারালেন মাহি। তবে মাহির ভক্তদের চাওয়া আবারও বড় পর্দায় সরব হবেন প্রিয় তারকা মাহিয়া মাহি।