এস আলমের ২৫ কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ, সাইপ্রাসের বাড়ি জব্দের আদেশ

মনির হোসেন, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে সাইপ্রাস ও ব্রিটেনে থাকা বিপুল বিদেশি সম্পদ জব্দ ও বিনিয়োগ অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক তিনটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। দুদকের আবেদনে বলা হয়, সাইফুল আলম ও ফারজানা পারভীন সাইপ্রাস, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস ও জার্সি আইল্যান্ডসে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মালিক।
এই সম্পদের মধ্যে আছে সাইপ্রাসে একটি দুই তলা আবাসিক ভবন, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে ১৯টি কোম্পানির শেয়ার ও জার্সিতে ছয়টি কোম্পানির শেয়ার। ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসের ১৯টি কোম্পানির মধ্যে হ্যাজেল ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠান আছে। এর মালিক সাইফুল আলম ও ফারজানা পারভীন।
প্রতিষ্ঠানটির বাজারমূল্য পাঁচ লাখ ৯৫ হাজার ডলার। তারা পিকক প্রপার্টি হোল্ডিং লিমিটেড নামের আরও একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। এর বাজারমূল্য উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া, এই দম্পতি জার্সি আইল্যান্ডসে আরও ছয়টি প্রতিষ্ঠানের মালিক। এগুলোর বাজারমূল্যও দুদকের আবেদনে বলা হয়নি। এটি ব্রিটিশ রাজার অধীন স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল।
আবেদনে বলা হয়, অর্থপাচারের অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান চলাকালে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ওই দম্পতি অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকা ব্যবহার করে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ (কোম্পানির শেয়ারসহ) অর্জন করেছেন। দুদক কর্মকর্তারা নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানতে পেরেছেন, এই দম্পতি যেকোনো সময় তাদের সম্পদ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই তাদের সেই প্রচেষ্টা ঠেকাতে আদালতের আদেশ প্রয়োজন।
আদালত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেন, যেন পরবর্তী উদ্যোগ নেওয়া যায়। গত ১৭ জুন একই আদালত এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, তার পরিবারের সদস্য ও তাদের সুবিধাভোগীদের মালিকানাধীন ২০০ দশমিক ২৬ একর স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন।
এর বাজার মূল্য ১৮০ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর আগে গত ২৩ এপ্রিল একই আদালত এস আলম ও তার পরিবারের মালিকানাধীন নয় হাজার ৬৪৬ দশমিক শূন্য চার কাঠা জমি বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেন। এর বাজারমূল্য ৪০৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। গত ১৭ এপ্রিল একই আদালত তাদের এক হাজার ৩৬০টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আদেশ দেন।
এসব ব্যাংক হিসাবে মোট দুই হাজার ৬১৯ কোটি টাকা আছে। আদালত গত ৯ এপ্রিল এস আলম ও তার পরিবারের সাত হাজার ৯১৯ দশমিক ৫২ কাঠা জমি বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেন। এ ছাড়াও, গত ৩০ জানুয়ারি দুর্নীতির অভিযোগে আদালত এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৫৮ একর স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে দুদককে নির্দেশ দেন।