তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার কমানোর দাবি
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : দেশের পুঁঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর করহার কমানোর দাবী করেছেন ঢাকা চেম্বারের নেতারা। আজ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে এসব দাবী করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান। এর পাশাপাশি কর্পোরেট করহার কমানোরও প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।
ডিসিসিআই’র পক্ষ থেকে দাবী করা হয়, পুঁঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির লভ্যাংশ আয়ের ওপর করহার রয়েছে ২০ শতাংশ। এতে কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ৫ শতাংশ কমিয়ে এসব কোম্পানিগুলোর জন্য করহার ১৫ শতাংশ করা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির লভ্যাংশ আয়ের ওপর করহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ, নন পাবলিক ট্রেড কোম্পানির কর্পোরেট করহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ, পাবলিক ট্রেডড কোম্পানির করহার ২৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ, মার্চেন্ট ব্যাংক করহার ৩৭.৫ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ ও ব্রোকারেজ অপারেশনস এর করহার ৩৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন ডিসিসিআই সভাপতি।
বিকেলে এনবিআর সম্মেলন কক্ষে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় বসে ডিসিসিআই। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান। সভায় ডিসিসিআই এর নেতৃবৃন্দ, এনবিআরের সদস্য ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ডিসিসিআই নেতারা বলেন, লভ্যাংশের ওপর করহার কমানোর ফলে উদ্যোক্তারা নিন্মহারের কর দিতে উৎসাহিত হবে এবং মোট কর আদায়ের পরিমান বাড়বে বলে জানান তিনি। এতে করে ব্যবসা প্রসার এবং বৈষম্য দূর হবে। একইসঙ্গে মধ্য আয়ের জনগোষ্ঠিও কর দিতে উৎসাহিত হবে। করের বোঝা না বাড়িয়ে করনেট বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৩০ সালের মধ্যে আরও শক্তিশালী অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে হলে করের কোনো বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে করহার নয়, করনেট বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে ডিসিসিআই তথা ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা দেবে। তিনি যোগ করেন, জনগণ কর দিতে চায়। সেক্ষেত্রে কর দেয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ট্যাক্স জিডিপি ১৪ শতাংশে উন্নীত করতে হলে ১০ লাখ নতুন করদাতা খুঁঁজে বের করতে হবে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার ওপর আমরা জোর দিচ্ছি।
ডিসিসিআই’য়ের এসব দাবী বিপরীতে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী অর্থবছরের বাজেটকে অধিকতর ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব করতে কাজ করছে এনবিআর। এজন্য ব্যবসায়ীসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী করহার না বাড়িয়ে করনেট বৃদ্ধিতে কাজ করছে এনবিআর। সেজন্য সারাদেশ তথা প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমরা নতুন করদাতা খুঁঁজে বের করতে কাজ করছি। তিনি বলেন, রাজস্বের ক্ষেত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের রাজস্ব আহরণ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। আয়কর মেলা বাংলাদেশের নতুন উদ্ভাবন। এর মাধ্যমে প্রতিবছর করদাতাদের সেবা দেয়ার বিষয়টি বেশ প্রশংসিত হচ্ছে। গতবছর আয়কর সপ্তাহ নতুন যুক্ত হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ সেবা নিয়েছে। করসেবা দৌরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এবছর সারাদেশে ট্যাক্স ক্যাম্প শুরু করা হবে। করনেট বৃদ্ধির জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। সন্তানের ভবিষ্যত চিন্তা করে, নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যতকে উজ্জল করার জন্য সকলকে রাজস্ব প্রদানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।