খুলনা, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আলোচিত এরশাদ শিকদারের বিলাসবহুল বাড়ি ‘স্বর্ণকমল’ ভেঙে ফেলা হচ্ছে। খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গার মজিদ সরণিতে দাঁড়িয়ে ছিল তার বিলাসবহুল বাড়িটি। বুধবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে দোতলা এ বাড়িটির একাংশ ভাঙতে দেখা গেছে শ্রমিকদের।

তবে এ বিষয়ে এরশাদ শিকদারের পরিবারের সদস্যদের কেউ সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। বাড়ি ভাঙার কাজে নিয়োজিত শ্রমিক রবিউল জানান, স্বর্ণ কমলের অর্ধেক ভেঙে ফেলা হবে। যেখানে ১০ তলা ভবন করা হবে। এরশাদ শিকদারের ছেলেরাই ১০ তলা ভবন করবেন।

এরশাদ শিকদারের বহু অপকর্মের সাক্ষী ছিল এ বাড়ি। কোনো এক সময় এ বাড়ি দেখার জন্য ভিড় লেগে থাকতো।২০০৪ সালের ১০ মে খুলনা জেলা কারাগারে এরশাদ শিকদারের ফাঁসি কার্যকর করার পর জৌলুশ হারানো বাড়িটি ছিল রহস্যে ঘেরা।

জানা যায়, এরশাদের দুই স্ত্রী খোদেজা বেগম ও সানজিদা নাহার শোভা। এরশাদ শিকদারের তিন ছেলে রয়েছে। তারা হলেন- মনিরুজ্জামান শিকদার জামাল, কামাল শিকদার ও হেলাল শিকদার। তারা পেশায় ব্যবসায়ী। এছাড়া সুবর্না ইয়াসমিন স্বাদ ও জান্নাতুল নওরিন এশা নামে এরশাদ শিকদারের দুই মেয়ে ছিল। যার মধ্যে এশা ২০২২ সালের ৩ মার্চ আত্মহত্যা করে মারা যান।

সারা দেশে আন্ডারওয়ার্ল্ডের গডফাদার হিসেবে এরশাদ শিকদারের নাম ছড়িয়ে পড়েছিল তার উত্থানের পর পরই। সেই প্রতিপত্তির নমুনা হিসেবে তার আস্তানা তৈরি হয় বিশালবহুল এক বাড়িতে, নাম ‘স্বর্ণকমল’। খুলনার সে সময়ের সবচেয়ে বিলাসবহুল বাড়ি ছিল স্বর্ণকমল। ভারত থেকে নকশা করে আনা হয়েছিল এই বাড়ির।

দেশ-বিদেশের দামী দামী সব আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো এই বাড়ির ভেতরেই লুকিয়ে থাকার জন্য ছিল বাংকার। এরশাদের ব্যক্তিগত সংগ্রহে ৭০টি অস্ত্র থাকার তথ্য পাওয়া গেলেও পরে পুলিশ সেই বাংকার থেকে উদ্ধার করেছিল কেবল একটা বিদেশি বন্দুক ও আর একটা পিস্তল।

এরশাদ শিকদারের বিরুদ্ধে প্রায় ৬০টিরও বেশি খুনের অভিযোগ ছিল। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পর দুধ দিয়ে গোসল করতেন তিনি ও তার সহযোগীরা। অসংখ্য নারী ধর্ষণ, একাধিক বিয়েসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা এরশাদ শিকদার তার জীবদ্দশায় করেননি। এরশাদ শিকদারের জন্ম ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মাদারঘোনা গ্রামে। তার বাবার নাম বন্দে আলী। ১৯৬৬-৬৭ সালে তিনি তার জন্মস্থান নলছিটি থেকে খুলনায় চলে আসেন।