দেশ প্রতিক্ষণ, শরণখোলা: বাগেরহাটের শরণখোলায় সরিষার চাষে কৃষকরা ঝুঁকে পড়েছে। কৃষকদের ভাগ্য বদলের চাষ সরিষা। যে কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর ৩ গুণ বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের সৌরভে এলাকার চেহারা বদলে গেছে। সুন্দর ও মনমুগ্ধকর দৃশ্য চাষী ও পথচারীদের আকৃষ্ট করছে। অল্প খরচ আর কম পরিশ্রমে অধিক লাভজনক হওয়ায় সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে এ উপজেলার কৃষকদের। তারা নিজেদের চাহিদা মিটেও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ সহকারী ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ মশিউল আলম জানায়, বারি সরিষা ১৪ ও ১৭ এবং বিনা সরিষা ৪ ও ৯ জাতের উচ্চ ফলনশীল বীজ চাষীদের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য ২৫ টি প্রদর্শনী ও ১০০ জন চাষীকে সরিষার বীজ বিতরণ করা হয়েছে। পূর্ব খোন্তাকাটা গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল শিকদার বলেন তিনি ও তার পুত্র কবির শিকদার ছয় বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন।

তিনি বলেন এ মাঠে একসময় ধান আর এ সময় খেশারীর চাষ হতো। তিন বছর ধরে ব্যাপক আকারে সরিষার চাষ হচ্ছে। খেশারী ডালের চেয়ে তিন চার গুন বেশি আয় হয় সরিষা চাষে। তাছাড়া তেলের চাহিদা মিটিয়ে অর্থনৈতিকভাবে আমরা স্বাবলম্বী হচ্ছি। আমাদের এ মাঠে প্রায় ৪০০ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের সরকারি চাকুরিজীবি ও চাষি সাইফুল ইসলামা(নজরুল) মোল্লা জানায়, তিনি গত বছর ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করছিলেন। চলতি মৌসুমে ২০ বিঘা পতিত জমিসহ ৩০ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। খুলনা থেকে টরি-৭, বারি সরিষা-১৪, বিনা সরিষা-৭ ও ৯ উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ সংগ্রহ করে বপন করেছেন।

এলাকায় পানি সংকটের কারণে নিয়ম অনুযায়ী সেচ দিতে পারছেন না। একারনে পরবর্তিতে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করেেছন। ৩০ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে গিয়ে এপর্যন্ত লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

মধ্য খোন্তাকাটা গ্রামের জাহাঙ্গীর মাতুব্বর বলেন, তিনি ৩ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। তাদের পাশাপাশি একই মাঠে প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। খরচ কম ও অধিক লাভ জনক এজন্য আমিসহ অনেকেই এ বছর প্রথম সরিষার চাষ করেছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার দেবব্রত সরকার বলেন, কৃষকদের ভাগ্য বদলের চাষ সরিষা। চাষিরা তা বুজতে পেরে গত বছরের তুলনায় এবছর তিনগুণ জমিতে সরিষার চাষ করেছে। কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন ভাবে ভোজ্য তেলের প্রধান ফসল সরিষার তেলের চাহিদা মিটাতে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে চাষীদের উৎসাহিত করা হয়েছে।

শতাধিক চাষীকে সরকারি প্রনোদোনা উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে যে ভাবে ফুল আসছে তাতে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।