তৌফিক ইসলাম ও মোবারক হোসেন, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিজের জনপ্রিয়তা প্রমাণ করেছিলেন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সেই নির্বাচনে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা মজিবুর রহমান সরোয়ারকে হারিয়েছিলেন বিপুল ভোটের ব্যবধানে। যেখানে তার আগের নির্বাচনে বিএনপির আরেক নেতা প্রয়াত আহসান হাবীব কামালের কাছে হেরেছিলেন প্রয়াত শওকত হোসেন হিরন।

প্রয়াত শওকত হোসেন হিরন মৃত্যুর পর বরিশাল বিএনপির ঘাটিতে সাদিকের নেতৃত্বে বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগের শক্ত অবস্থান তৈরি করেন। যার ফলশ্রুতিতে আরেকবার সিটি মেয়র পদে দলীয় মনোয়ন পাবেন এটাই ছিল বরিশাল মহানগর ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর প্রত্যাশা; কিন্তু দল মনোনয়ন দিয়েছে তারই আপন চাচা খোকন সেরনিয়াবাতকে।

যদিও বরিশালের রাজনীতির সাথে খোকন সেরনিয়াবাত কখনোই জড়িত ছিল না। বলা যায় বরিশালের রাজনীতিতে তিনি নতুন মুখ। ফলে বরিশালের আওয়ামীলীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মী হতাশ। শুধু তাই নয়, সাদিক নৌকা না পাওয়ায় কষ্ট পেয়েছেন বরিশাল সিটির অনেক সাধারণ মানুষ। প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

গত শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে খোকন সেরনিয়াবাতকে মেয়র পদে প্রার্থী ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় দলীয় প্রার্থিতা ঘোষণার পর বরিশালের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে নেই কোন উল্লাস। বরং বরিশালের এলাকার বেশিরভাগ নেতাকর্মীর প্রতিক্রিয়া ছিল ভিন্ন। তাদের আশা ছিল, এবারও মনোয়ন পাবেন সাদিক আবদুল্লাহ। কারণ দীর্ঘদিন তৃণমূলে কাজ করে তিনি বরিশালবাসীর যুবরত্ন হিসেবে পরিচিত পেয়েছেন।

দীর্ঘদিন বরিশাল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি যেমন নিজের সাংগঠনিক দক্ষ ও যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। তেমনি দলের দুঃসময়ে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলতে ভূমিকা রেখেছেন। সুখে-দুঃখে নেতাকর্মীদের পাশে থাকায় কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও তার জনপ্রিয়তা ব্যাপক। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি মানুষের পাশে ছিলেন। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর বরিশাল মহানগরের উন্নয়নের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের যে কোনো সমস্যা সমাধানে নিরলস পরিশ্রম করেছেন। ফলে তার জনপ্রিয়তা ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে খোকন সেরনিয়াবাত বরিশালে নৌকা মাঝি ঘোষণার হওয়ার পর থেকে প্রয়াত শওকত হোসেন হিরনের গ্রুপের লোকজন ভল্ট পাল্টিয়ে সাদিক আবদুল্লাহর বিরোধী শিবির হয়ে বরিশাল আওয়ামীলীগের লোকজনের উপর হামলা চালিয়েছে। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ঐ গ্রুপটির ভয়ে আতঙ্কে রয়েছেন।

এছাড়া ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছে নগরীতে সাদিক আবদুল্লাহর ব্যানারে কে বা কাহারা ছিড়ে ফেলেছে। এছাড়া বরিশালের বিভিন্ন বাস কাউন্টারে নিরীহ শ্রমিকদের উপর হামলা চালিয়েছে ঐ বিরোধী শিবিরের লোকজন।