রাকিবুল ইসলাম তনু, পটুয়াখালী : টুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলা ও কলাপাড়া পৌর ছাত্রলীগ ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে। কমিটি ঘোষণার আধঘন্টার মধ্যে স্থগিত করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

সোমবার(১০ জুলাই) রাত ১১.৩০ টায় পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান আরিফ এর স্বাক্ষরিত প্যাডে কলাপাড়া উপজেলায় হাসিবুল হাসান কে সভাপতি ও বাবু তালুকদার কে সাধারন সম্পাদক,পৌর ছাত্রলীগের কমিটিতে রাকিবুল হাসান রাব্বি কে সভাপতি ও রাকিবুল ইসলাম কে সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারি কলেজ শাখা কমিটিতে জসিম উদ্দিন জিতু কে সভাপতি ও মিজানুর রহমান মুসা কে সাধারন সম্পাদক করে এক বছরের জন্য আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটি ঘোষণার পর পর কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিক তালুকদার তার ফেইসবুক একাউন্টে কিছু ব্যাগ ভর্তি টাকার ছবি পোস্ট করে স্টাটাস দেওয়া হয় যেখানে তিনি লিখেছেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি টাকা গুলো যা নিয়েছেন তা দয়া করে ফেরত দেন নাইলে গণভবনে যাব বাকি ডকুমেন্ট নিয়া।

ছাত্রলীগ করায় তেজ্যপূত্র হওয়া সেই ছাত্রলীগ নেতা রুদ্র তার ফেইসবুক একাউন্টে একটি পোস্ট করেন যেখানে তিনি লিখেছেন, ভাই আমার কথা বলে যে আমার বড় ভাই কাছ থেকে যে টাকা নিছে বাসায় ভাড়া ঈদের বোনাস শপিং খরচ এবং কুয়াকাটা গিয়ে যে প্যান্ট কিনলাম এবং আইফোন ১১ব্লাক রংয়ের সে টাকা কয়টা ভেতর দেন আমি অনেক অভাবে আছি ভাই দয়া করে সভাপতি জেলা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল একটি কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামকে বলেন, ভাই আমার থেকে যে টাকা নিয়েছেন টাকা গুলো ফেরত দিয়ে দেন? অপর প্রান্ত থেকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন তুই ফোন রাখ।

তবে কমিটি ঘোষনার পরপরই বিতর্কিত, অসাংগঠনিক ও বিনএপি পরিবারের লোকদের দিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে।কেউ কেউ বলছেন মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিতর্কিত এবং বিএনপি পরিবারের লোকদের কমিটিতে স্থান দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগ।

ফলে আধঘণ্টার মাথায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত এক প্যাডে উক্ত সব কমিটি সাময়িক ভাবে স্থগিত করা হয়।এতে কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে ত্যাগী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরদের মাঝে।

কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিক তালুকদার বলেন,মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিএনপি পরিবারের লোকদের দিয়ে কমিটি গঠন করেছে জেলা ছাত্রলীগ। এবং আমাকে নেতা বানানোর কথা বলে সব মিলিয়ে ২০ লক্ষ টাকা নিয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, এবং বিভিন্ন সময় তিনি তার খালাতো ভাই সাব্বির এর মাধ্যমে আমার থেকে ১০ হাজার কখনো ২০ হাজার এইভাবে টাকা নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, আসলে এই ব্যাপারটা একদম মিথ্যা বানোয়াট, যে যার নিজের পার্সোনাল ফেইসবুক একাউন্ট থেকে লিখতেই পারে। কল রেকর্ডের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, কল রেকর্ডটিতে শুনতে পারবেন শুরুতেই তাকে পাশ থেকে শিখিয়ে দিয়েছিলো যে টাকার কথা বলার জন্য ওর ব্যাবহারটা এতোটা উচ্চ ছিলো যেকারণে আমি ফোনটি রেখে দিতে বলি।

এ ব্যাপারে জানতে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যোগাযোগে ব্যার্থ। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি আলহাজ্ব কাজী আলমগীর হোসেন জানান, আমি বিষয়টি শুনেছি যে অভিযোগের কারনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কমিটি স্থগিত করেছে, যদি এইধরনের ঘটনার বিনিময়ে কমিটি হয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক এবং এটা দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী।