শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ঈদুল আজহার ছুটি পূর্ববর্তী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় উত্থান হলেও অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের গত ৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। মুলত আস্থা সংকটে থাকায় বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হচ্ছেন না। এছাড়া বাজেট ঘোষণার পর সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস সূচকের যে পতন দেখা গিয়েছিল তা সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কাটিয়ে উঠেছে।

এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল প্রায় ২৫ পয়েন্ট কমে গেলেও, সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রায় সাড়ে ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৭০৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এই উত্থান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে এবং বাজারের নেতিবাচক প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দিচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আজকের সূচক বৃদ্ধি সাময়িক হতে পারে এবং এটি বাজারের সামগ্রিক স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত নাও দিতে পারে। তাদের মতে, যখন লেনদেন কমে আসে, তখন বোঝা যায়, হয় বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগ করতে আগ্রহী নন, অথবা তারা বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। বাজেট-পরবর্তী অনিশ্চয়তা এবং বিশ্ব অর্থনীতির সামগ্রিক পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে উৎসাহিত করছে।

অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী কাজী মাসুদ আলম বলছেন, সূচক বৃদ্ধি অবশ্যই একটি ভালো লক্ষণ, তবে লেনদেন কমে যাওয়াটা কিছুটা চিন্তার বিষয়। এর মানে হলো, বাজারে এখনো বড় বিনিয়োগকারী বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নেই। আস্থার সংকট পুরোপুরি কাটেনি। সামনের দিনগুলোতে বাজারের গতিবিধি কেমন হবে, তা নিয়ে মিশ্র পূর্বাভাস দিচ্ছেন তিনি।

তবে কেউ কেউ মনে করছেন, বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ঘোষিত প্রণোদনাগুলো দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি বাজারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

এদিকে ঈদুল আজহার ছুটি পূর্ববর্তী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচক সাথে বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। তবে কমেছে টাকার পরিমানে লেনদেন। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭০৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭৬২ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৬ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৭৭ টির, দর কমেছে ৫৫ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৪ টির। ডিএসইতে ২২৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২২৯ কোটি ৬ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ১৩৯ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৬৯ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৪ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৫৪ টির এবং ৩১ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১০ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।