পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতে পতন, বিমা খাতে উত্থান
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের উঠানামার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে মঙ্গলবার বেশির ভাগ সময় সূচক ছিল ছয় হাজার পয়েন্টে। তবে লেনদেন শেষে সূচকের সামান্য উত্থানে শেষ হয়েছে দিনের কার্যক্রম। লেনদেন আগের দিনের তুলনায় বাড়লেও সূচকের উত্থানে বড় ভূমিকা রাখতে পারেনি ব্যাংক খাত। সোমবার বিমা খাতের শেয়ারের দরপতন হলেও মঙ্গলবার ঢালাওভাবে বেড়েছে এ খাতের শেয়ারের দর।
এক দিন বাদেই ঘোষণা করা হবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। এরই মধ্যে আলোচনায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও নন-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর কামনোর খবর। বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সম্প্রতি এক ডায়ালগে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করপোরেট করের সুবিধা দেয়া হলে ভালো মানের কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবে- এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক দেবব্রত কুমার সরকার। এ ছাড়া আসন্ন বাজেটে ব্রোকার হাউসগুলোর ট্রেডিংয়ের ওপর অগ্রিম আয়কর কমানো, পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অপ্রকাশিত অর্থ সাদা করার সুযোগ ও লভ্যাংশের ওপর করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার লেনদেনে দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধির তালিকায় সবচেয়ে বেশি ছিল বিমা খাতের কোম্পানি। এ ছাড়া বস্ত্র খাতের কিছু কোম্পানির উপস্থিতি ছিল এ তালিকায়। তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে থেমে থেমে বেড়েছে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের শেয়ার দর। মঙ্গলবার সে ধারা থেকে বের হয়ে দর বেড়েছে ঢালাওভাবে। দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া প্রায় ১০টি কোম্পানির সাতটিই ছিল বিমার।
২০২০ সালের শেয়ারধারীদের ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণার পর মঙ্গলবার প্রগতি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটির শেয়ার দরের কোনো সীমা ছিল না। ফলে এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২০ দশমিক ৯০ শতাংশ। শেয়ার দর ৮১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৮ টাকা ৯০ পয়সা।
এ তালিকায় থাকা গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ৫১ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৬ টাকা ১০ পয়সা। মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৭ শতাশ। শেয়ার দর ৪৮ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫২ টাকা ৯০ পয়সা।
রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর ৭১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৮ টাকা ৪০ পয়সা। স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ার দর ৫৪ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৯ টাকা ৭০ পয়সা। গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ৯৪ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০৪ টাকা ২০ পয়সা।
প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এ তালিকায় আছে ইর্স্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৭ শতাংশ পর্যন্ত।
এদিন দর কমেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। দর পাল্টায়নি ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। বাড়েনি ব্যাংকের শেয়ার দর: চলতি সপ্তাহের শুরুতে কিছুটা উত্থান দেখা গেলেও পরবর্তী সময়ে ব্যাংকের শেয়ারের ঢালাওভাবে উত্থান দেখা যায়নি।
মঙ্গলবার লেনদেনে ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ছয়টির। দর পাল্টায়নি একটির। বাকি ২৪টির দর কমেছে। আগের দিন সোমবার লেনদেন শেষে দর বেড়েছিল মাত্র পাঁচটির। ব্যাংকখাতের এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার দর মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। এদিন ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি দর ৩৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা ৯০ পয়সা।
তারপরে ছিল ডাচ বাংলা ব্যাংক, যার শেয়ার প্রতি দর ৭৬ দশমিক ২০ পয়সা থেকে ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে হয়ছে ৭৯ দশমিক ২০ পয়সা।আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এবি ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
কিছু ব্যাংকের শেয়ার দরে উত্থান থাকলে কমেছে সবচেয়ে বেশি। এদিন ঢাকা ব্যাংকের শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। শেয়ার দর ১৬ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা। ইউসিবির শেয়ার দর কমেছে ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। লেনদেনে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৭ টাকা ৬০ পয়সা।
ইর্স্টান ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৯০ শতাংশ। ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ০২ শতাংশ। লেনদেনে ৯ টাকা ৯০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৯ টাকা ৭০ পয়সা। এছাড়া রূপালী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, শাহজালাল ব্যাংক, যমুনা ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে দেড় শতাংশ পর্যন্ত।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, একদিন পরই ঘোষণা করা হবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। সেখানে কী কী বিষয় থাকতে পারে সেটিরও কিছু আভাস পাওয়া গেছে। এরমধ্যে করপোরেট কর হার কমানো, ব্রোকার হাউজগুলোকে বাজেটে সুবিধা প্রদান উল্লেখযোগ। তিনি জানান, বিমার শেয়ার দর বেশ কিছু দিন কমেছে। বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্য সংশোধন হয়েছে। তবে যেভাবে বিমার শেয়ার দরের উত্থান হয়েছে মূল্য সংশোধন আরও কিছু হওয়া উচিত ছিল।
ব্যাংকের শেয়ার দর যে অবস্থায় আছে তা থেকে আরও উত্থান প্রয়োজন। কারণ পুঁজিবাজারে ফান্ডামেন্টাল বলতে ব্যাংক, নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকেই বলা হয়। কিন্তু এগুলোর ধারাবাহিক কোনো উত্থান নেই। লেনদেন ভালো হচ্ছে। সে সঙ্গে ভালো কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বাড়লে পুঁজিবাজারও ঝুঁকিমুক্ত হতো।
ব্লক মার্কেটে লেনদেনের চমক জেনেক্স ইনফোসিস: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (১ জুন) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৩৫টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৩৮ কোটি ৮৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর ৭৭ লাখ ৫৫ হাজার ৫৬৫টি শেয়ার ৯৭ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৩৮ কোটি ৮৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫ কোম্পানির বড় লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে জেনেক্স ইনফোসিসের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৬৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ডাচবাংলা ব্যাংকের ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৫২ হাজার টাকার। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩ কোটি ৫০ লাখ ৩২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে এনআরবিসি ব্যাংকের। চতুর্থ সর্বোচ্চ ৩ কোটি ২৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে বিডি ফাইন্যান্সের। চতুর্থ সর্বোচ্চ ৩ কোটি ১ লাখ ৮৯ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের।
এছাড়া লংকাবাংলার ২ কোটি ৮৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকার, ম্যারিকোর ২ কোটি ১০ লাখ টাকার, ন্যাশনাল পলিমারের ১ কোটি ২৮ লাখ ৯১ হাজার টাকার, জিএসপি ফাইন্যান্সের ১ কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ৮৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকার, নর্দার্ন ইন্সুরেন্সের ৭৯ লাখ ৮৬ হাজার টাকার, আমান কটনের ৭৫ লাখ ৩২ হাজার টাকার, কাট্টালী টেক্সটাইলের ৬৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকার,
ন্যাশনাল ফিড মিলের ৪৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার, প্রগতি ইন্সুরেন্সের ৩৮ লাখ ৭০ হাজার টাকার, ইফাদ অটোর ৩৪ লাখ টাকার, স্টানডার্ড ইন্সুরেন্সের ৩৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার, ডিবিএইচের ২৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকার, এসকে ট্রিমসের ২৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকার, গ্রীন ডেল্টা ইন্সুরেন্সের ২০ লাখ ৪৭ হাজার টাকার, সোনারবাংলা ইন্সুরেন্সের ১৮ লাখ ২৫ হাজার টাকার, উত্তরা ব্যাংকের ১৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকার,
রিলায়েন্স ইন্সুরেন্সের ১৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকার, ফিনিক্স ইন্সুরেন্সের ১৫ লাখ টাকার, তৌফিকা ফুডের ১৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার, আরডি ফুডের ১৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকার, রূপালী লাইফের ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার, কনটিনেন্টাল ১২ লাখ ২৫ হাজার টাকার,
ইসলামী ফাইন্যান্সের ১০ লাখ ৯৫ হাজার টাকার, লিগ্যাসী ফুটের ১০ লাখ ৫৪ হাজার টাকার, এসিআইয়ের ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকার, ডরিন পাওয়ারের ৮ লাখ ৪ হাজার টাকার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৫ লাখ ৩৩ হাজার টাকার, অলিম্বিক ইন্ডাস্ট্রিজের ৫ লাখ ১৮ হাজার টাকার, মার্কেন্টাইল ইন্সুরেন্সের ৫ লাখ ৬ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।
ফাস ফাইন্যান্সের পর্ষদ পুনর্গঠন করছে বিএসইসি: পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নানা অনিয়মে জর্জরিত ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে । ৩১ মে সোমবার কোম্পানিটির পর্ষদ পুনর্গঠন করে কোম্পানিতে চিঠি ইস্যু করেছে বিএসইসি। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দ্বিতীয় কোম্পানি এটি। এর আগে গত ২৯ মার্চ ফারইস্ট ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছিলো বিএসইসি।
যারা আসছেন নতুন পর্ষদে: বিএসইসি সূত্র মতে, কোম্পানিটিকে নতুনভাবে সাজাতে পাঁচজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে বিএসইসি। তারা হলেন এনসিসি ও মেঘনা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্সের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন খান, সেনাবাহিনীর বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (এলপিআর) আবু সাইদ মোহাম্মদ আলী, ক্রেডিট রেটিং কোম্পানি ক্রিসেলের উপ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন এফসিএমএ, বিআইসিএমের অনুষদ সদস্য মোহাম্মদ সেলিম।
একনজরে নুরুল আমিন: পুনর্গঠন করা পর্ষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন নুরুল আমীন। তিনি ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এনসিসি ব্যাংক) ও মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) এর সাবেক চেয়ারম্যান। নুরুল আমীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৩ সালে অর্থনীতিতে স্নাতক ও ১৯৭৪ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে জনতা ব্যাংকে তাঁর চাকরিজীবন শুরু করেন।
প্রসঙ্গত, তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে কানাডায় পলাতাক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার)। এরই মধ্যে চলতি বছরে বেশ কিছু মামলা হয়েছে পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন হিসাবে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের কথা বলা হলেও দুদকের কাছে দেওয়া বাংলাদেশ ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য থেকে জানা যায়, চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশান্ত কুমার হালদার সরিয়েছেন ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বিএফইইউর তথ্যমতে, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (এফএএস) থেকে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এছাড়া বাকি তিনটি কোম্পানি হলো পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা, এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সরান পি কে হালদার চক্র।
পিকে হালদার নিজে ও তার নিকটাত্মীয়স্বজনের নামে ও বেনামে নতুন নতুন কোম্পানি খুলে ঋণ বা লিজ নেয়ার মাধ্যমে এই অর্থ আত্মসাৎ করেন। ফাস ফাইন্যান্সের ওপর পরিচালিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ।
২০০৮ সালে পুঁজিবাজারে আসা ‘বি’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১১০ কোটি ৮৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভে আছে ২২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১১ কোটি আট লাখ ৩৯ হাজার ২৮৪। মোট শেয়ারের মধ্যে ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের হাতে, ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক, এবং ৭৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে।
আলহাজ্ব টেক্সটাইলের ১৫ জুন থেকে কারখান চালু: প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার আগামী ১৫ জুন থেকে কারখানা চালু করছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি আলহাজ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড। কোম্পানির ৪৪৬তম পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানি সূত্র মতে, মূলধনের সমস্যা, বাজারে পণ্যের চাহিদা না থাকা এবং গুদাম মজুদ পণ্যে থাকায় নতুন পণ্য রাখার জায়গার অভাব দেখিয়ে ২০১৯ সালের ২৫ জুন এক মাসের জন্য কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। প্রথমে এক মাসের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও পরবর্তীতে কয়েক দফায় এর মেয়াদ বাড়ানো হয়।
এবার কোম্পানি জানিয়েছে, উৎপাদনকৃত সুতা বিক্রি হওয়ায় এবং গুদামে সুতার পরিমাণ কমে আসায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এর পরিচালনা পর্ষদ পুনরায় উৎপাদন শুরুর করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে ১৫ জুন কারখানা চালু ও উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছে।