দেশ প্রতিক্ষণ, বরিশাল ও উজিরপুর: বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার বিঘা আয়তনের পুটিয়ারি বিল দখলের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৫ জুলাই) বেলা ১টার দিকে উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের পটিবাড়ি বাজারে হামলার ঘটনা ঘটে।

উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিন উদ্দিন হামলার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। হামলার শিকার উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি অভিযোগ করেছেন, সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খালেক আজাদের ছেলে মশিউর মিয়া তার ওপর হামলা চালিয়েছেন।

উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর, তার ভাই মনির ও তাদের সহযোগীরা আজ দুপুরে বাজারে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে আমার ওপর হামলা, দোকান ভাঙচুর ও টাকা লুট করেছে।’

তিনি বলেন, ‘পুটিয়ারি বিল দখল করে সেখানে জোর করে মাছ চাষ করছিলেন মশিউর মিয়া ও তার ভাই মনির মিয়া। আমরা এর প্রতিবাদ করায় তারা ক্ষুব্ধ হন। আমরাও বিলে মাছ ছেড়েছি, এতে তারা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে আমার ওপর হামলা করে।’

‘আজ বেলা ১টার দিকে আচমকা মনির ও মশিউরসহ অন্তত ৩০ জন রড, লাঠিসোটা নিয়ে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ইভা এন্টারপ্রাইজে হামলা চালায়। তারা আমাকে পিটিয়ে আহত করে। হামলার সময় স্থানীয় সাংবাদিক নিকুঞ্জ বালা পলাশ ও স্থানীয় মেম্বার অমল মণ্ডলসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তারা ৫ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে, ‘ বলেন উজ্জ্বল। পলাশ বলেন, ‘হামলার সময় আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিডিও করছিলাম। সে সময় আমার ওপর হামলা চালানো হয়। তারা আমার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে।’

সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বলেন, ‘মনির মিয়া ও তার ভাই মশিউর মিয়ার নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে। আমি ইতোমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে বিষয়টি জানিয়েছি।’

‘খালেক আজাদ বিলটি দখল করে রেখেছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পরে তার ২ ছেলে মনির ও মশিউর এই বিলটি দখলে রাখতে চাচ্ছে। প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল ছাড়াও অনেকে এর প্রতিবাদ করছিলেন। যে কারণে প্রকাশ্যে হামলা করেছে ২ ভাই ও তাদের সহযোগীরা,’ বলেন তিনি।

মমিন উদ্দিন বলেন, ‘হামলার খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমি শুনেছি ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকে হামলার ঘটনা ঘটেছে,’ বলেন তিনি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে মনির ও মশিউর মিয়াকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।’